কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলায় ভণ্ডপীর শামীম রেজা (৫৫) গ্রেপ্তার হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ফিলিপনগর গ্রামের নিজ আস্তানা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দৌলতপুর থানা পুলিশ। তিনি দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের পশ্চিম-দক্ষিণ ফিলিপনগর গ্রামের মৃত জেছের আলী মাস্টারের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিম-দক্ষিণ ফিলিপনগর গ্রামে আস্তানা গেড়ে মুসলিম রীতি না মেনে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে মরদেহ দাফন, দুধ শরীরে মেখে তা ভক্তদের দিয়ে চেটে খাওয়ানোসহ ইসলাম ধর্ম বিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল ভণ্ডপীর শামীম রেজা। ইসলাম ধর্ম বিরোধী প্রকাশ্য এমন কর্মকাণ্ড পরিচালনার কারণে ধর্মপ্রাণ মুসলমানসহ এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। এ ঘটনায় খালিদ হাসান নামে এক ব্যক্তি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে ভণ্ডপীর শামীম রেজার নামে গত বুধবার দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর দৌলতপুর থানা পুলিশ বৃহস্পতিরার গভীর রাতে উপজেলার পশ্চিম-দক্ষিণ ফিলিপনগর গ্রামে ভণ্ডপীর শামীম রেজার আস্তানায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
ভণ্ডপীর শামীম রেজা গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্তকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, শামীম রেজার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা ছাড়াও মানুষকে জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় ও প্রতারণাসহ ৮টি অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলার পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে নিজ আস্তানা থেকে শামীম রেজাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ই মে রাতে মুসলিম রীতি না মেনে ঢোল বাজিয়ে নেচে-গেয়ে রাব্বি হোসেন (১৭) নামে এক মুসলিম কিশোরের লাশ তার নিজ আস্তানায় দাফন করে ভণ্ডপীর শামীম রেজা। ইসলাম ধর্ম বিরোধী এমন ঘটনা সেসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দৌলতপুরসহ সর্বত্র সমালোচনার ঝড় ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তখন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ ছাড়াও ভণ্ডপীর শামীম রেজা শরীরে দুধ ঢেলে তা ভক্তদের দিয়ে চেটে খাওয়ানোর ঘটনা ঘটালে তা নিয়েও চরম ক্ষোভ দেখা দেয় এলাকাবাসীর মাঝে। এদিকে ভণ্ডপীর শামীম রেজা গ্রেপ্তার হওয়ার পর এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্থি ফিরেছে এবং প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।