গত মাসে মার্কিন ড্রোন হামলায় সাতটি শিশুসহ বেসামরিক মোট ১০ জন মানুষের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। তারা ওই ঘটনাকে ‘ট্রাজেক মিসটেক’ বা ভয়াবহ ভুল বলে অভিহিত করেছে। উল্লেখ্য, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আগে ২৯ শে আগস্ট আইএসের আত্মঘাতী বোমারুদের টার্গেট করে ওই হামলা চালানো হয়েছিল। এসব হামলাকারী কাবুল বিমানবন্দরে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর জন্য অত্যাসন্ন হুমকি ছিল। তাই তাদেরকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান মেরিন করপোরাল জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, বিমানবন্দরে ওই গ্রুপটি অত্যাসন্ন হুমকি হয়ে উঠেছিল। তাই আস্থার সঙ্গে তাদেরকে বিরত রাখতে হামলা চালানো হয়েছিল। কিন্তু আমাদের অনুসন্ধান এখন বলছে, হামলাটি চালানো হয়েছিল ভয়াবহ ভুলভাবে।
এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তিনি মনে করেন, ওই হামলায় যারা মারা গিয়েছেন তারা আইএসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আইসিস-খোরাসানের কোনো সদস্য ছিলেন না। এমনকি তারা মার্কিন সেনাদের প্রতি কোনো হুমকিও ছিলেন না। এ জন্য তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা বিবেচনা করছে পেন্টাগন।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের বাইরে অবস্থানরত ড্রোন ব্যবহার করে ওই হামলা চালানো হয়েছিল। এতে বেসামরিক মানুষের মৃত্যুতে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যত হামলার বিষয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার এবং আফগানিস্তানের মিত্রদের মধ্যে উদ্ধার অভিযান নিয়ে আরো সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এমনিতেই এ নিয়ে কড়া সমালোচনার মুখে রয়েছে বাইডেন প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, ওই ড্রোন হামলায় আহমাদি নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি অলাভজনক নিউট্রিশন অ্যান্ড এডুকেশন ইন্টারন্যাশনালে কর্মরত ছিলেন। আমরা এখন জানতে পারছি মিস্টার আহমাদি এবং আইসিস-খোরাসানের মধ্যে কোনো যোগসূত্র ছিল না। ওই দিন তার কর্মকা- ক্ষতিকর ছিল না। এমনকি আমরা যে অত্যাসন্ন হুমকির কথা মনে করেছিলাম, তিনি তাও ছিলেন না। এ জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করে এই ভয়াবহ ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবো।
কোনো সামরিক হামলায় বেসামরিক মানুষ মারা যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বা পেন্টাগণের শীর্ষ কর্মকর্তা বিশেষ করে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এভাবে ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ করা বিরল ঘটনা। ওই হামলার পর পরই রিপোর্ট প্রকাশ হয় যে, ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে কাবুলের পশ্চিমে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায়। এতে শিশুসহ বেসামরিক লোকজন নিহত হয়েছে। সেখান থেকে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ভবনের চারপাশে গাড়ির ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ওই সময় তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, এই হামলায় কমপক্ষে সাতজন নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করছে তালেবানরা।