× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সাংবাদিকদের সমাবেশ / বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, সোমবার

 সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠনগুলোর ১১ নেতার ব্যাংক হিসাব চাওয়ার প্রতিবাদে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন
নেতারা। তারা বলেছেন, এই ঘটনার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকদের আন্দোলন চলবে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন সাংবাদিকরা। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল। সমাবেশ থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা ১১ নেতার ব্যাংক হিসাব চাওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান। তারা বলেন, শীর্ষ সাংবাদিক নেতাদের হিসাব তলব গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। জাতীয় প্রেস ক্লাব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এই সমাবেশের আয়োজন করে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাংবাদিক সমাজ জাতির বিবেক।
তারা কোনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করে না। ব্যাংক হিসাব চাওয়ার পেছনে কোনো দুরভিসন্ধি রয়েছে। এর বিরুদ্ধে তিনি সাংবাদিক সমাজকে এক প্ল্যাটফরমে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, সাংবাদিক সংগঠনগুলোতে অনেক সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। কিন্তু, অনেক পেশাজীবী সংগঠনেও সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। রাগটা হয়তো সেখানেই। তারাই কেন স্পষ্ট নির্বাচনে বারবার নির্বাচিত হয়। অন্য পেশাজীবী সংগঠনগুলোকে কেন এসব নোটিশ দেয়া হয় না? শুধু রাগটা কেন সাংবাদিকদের ওপরে? আমার ধারণা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে ঠেকিয়ে রাখার জন্য এটা করা হয়েছে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখার জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করছি এবং করে যাবো।
সমাবেশে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘একটি গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। একটি মহল সাংবাদিক এবং সরকারকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্র করছে। সাংবাদিকদের রাস্তায় দাঁড়ানোর কথা নয়। কিন্তু, আজ তাদের রাস্তায় দাঁড়াতে হচ্ছে। বিষয়টি আমরা সরকারকে খুঁজে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের অভিযোগগুলো সুস্পষ্ট জানাতে হবে। আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করার অধিকার আপনাদেরকে দেয়া হয়নি। নানাভাবে আমাদের চরিত্র ক্ষুণ্নের চেষ্টা করা হচ্ছে। সাংবাদিক নেতাদের হিসাব চেয়ে এই চিঠি ইস্যু হওয়ার আগে আপনার (বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর) কাছে যায়নি। এটা কী আপনি দেখেননি? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তথ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করলাম তারা বললেন যে, আমরা জানি না। আমাদের প্রশ্ন হলো, তাহলে কে জানে? এ চিঠি কারা গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে উৎসাহ দিলো। এটা সাংবাদিক সমাজ জানতে চায়?
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, সাংবাদিকদের ব্যাংক হিসাব চাওয়ার পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। আমরা দেখছি যে, দেশে এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ আমলা এবং এক শ্রেণির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা দুর্নীতির মচ্ছব তৈরি করেছে। তারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করছে। অন্যায় অপকর্ম করে পার পাচ্ছে। তার কিছু ঘটনা সংবাদপত্রের পাতায় উঠে আসছে। তারা মনে করেছে যে, এই অপরাধের প্রধান বাধা হচ্ছে সাংবাদিকরা।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি মোল্লা জালাল বলেন, সংগঠন ও রাজনৈতিক মতকে সামনে রেখে যেভাবে হিসাব চাওয়া হয়েছে তা নজিরবিহীন। আমরা রাষ্ট্রের কাছে এর ব্যাখ্যা এবং প্রতিকার চাই। এর নিরসন চাই। উৎকণ্ঠা দূর করতে হবে। আমরা মনে করি, গণমাধ্যম ও সরকারের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতেই এটা করা হয়েছে। সন্তোষজনক সমাধান না হলে আমাদের আন্দোলন চলবে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, যাদের নামে হিসাব চেয়ে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে তারা নির্বাচিত নেতা। সাংবাদিকেরা তাদের যোগ্য এবং সৎ মনে করে নির্বাচিত করেছেন। তাদের হিসাব চেয়ে জাতির কাছে একটি মহল ভুল বার্তা দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বলেন, রাষ্ট্র যেকোনো ব্যক্তির হিসাব চাইতেই পারে। এটা তার অধিকার আছে। কিন্তু, প্রশ্ন রয়েছে যে, সংগঠনের নাম ব্যবহার করে এমন কোনো চিঠি ইস্যু করতে পারে কী-না। আর চিঠি কেমন করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলো। কারা এই চিঠি গণমাধ্যমে পাঠালো তা সাংবাদিক সমাজ জানতে চায়? বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন রোকন জানান, করোনা মহামারিতে সাংবাদিকেরা নিদারুণ কষ্টে দিনযাপন করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দ্রা জানাই। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, আজকে যখন শেয়ার বাজারের টাকা লুট হয় তখন আমরা তাদের বিচারের মুখোমুখী হতে দেখি না। কানাডায় বেগম পাড়ায় যাদের বাড়ি তাদের ব্যাংক হিসাব চাওয়া হয় না। ব্যক্তির সঙ্গে সংগঠনের নাম জড়ানোর পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরশালিন নোমানী বলেন, এ হিসাব চাওয়ার পেছনে একটি মহলের কারসাজি আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিকার না পাবো ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হচ্ছে সংবাদপত্র। কিন্তু, আজকে দেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান বলেন, সাংবাদিকদের ব্যাংক হিসাব চেয়ে জাতির সামনে হেয় প্রতিপ্রন্ন করা হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক মাইনুল আলম বলেন, একটি মহলের ইশারায় ১১ জন সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী, শুক্কুর আলী শুভ, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য শেখ মামুনুর রশীদ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য, ক্র্যাবের সভাপিত মিজান মালিক, সাবেক সভাপতি আবুল খায়ের, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম ও অর্থনৈতিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি শারমিন রিনভী প্রমুখ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর