দশমিনা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গছানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খবিরুল বশার রিন্টু এবং ওই বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক মো. মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে ভুয়া সনদপত্র দিয়ে চাকরি করার অভিযোগে গতকাল সোমবার দশমিনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন স্থানীয় দেলোয়ার হোসেন খান এর ছেলে একেএম মোস্তাফিজুর রহমান। ওই মামলায় বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি কাজী আনোয়ার হোসেনকে এসব ভুয়া জাল-জালিয়াতি সার্টিফিকেটে চাকরি প্রদান ও এমপিও পেতে সহায়তার অভিযোগে তিন নম্বর আসামী করা হয়েছে। মামলায় গছানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক চার জন অবিভাবক সদস্য সহ নয় ব্যক্তিকে সাক্ষী করা হয়েছে। মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গছানী মাধ্যমিক বিদ্যায়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বিএ (পাস) সনদপত্র তদন্ত করে জানতে পারেন ভুয়া এবং জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা। চাকরিতে যোগদানের সময় মো. মোস্তফা কামালের দেওয়া সার্টিফিকেট যার রোল নম্বর ৪৪৯৯৬ রেজি: নম্বর ১৩৯১৪৮ শিক্ষাবর্ষ ১৯৯২-৯৩ সালের ওই সনদপত্রটি মো. ফরিদ আহম্মেদ এর নামে নথিভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও মো. মোস্তাফিজুর রহমানের দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপ্লোমা ইন লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সাইন্স সনদপত্রটি ভুয়া ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গছানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. খবিরুল বশার রিন্টু দশমিনা উপজেলা সদরের বেগম আরেফাতুননেছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০০৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ভুয়া ও জাল কম্পিউটার সনদপত্র দিয়ে কম্পিউটার শিক্ষক পদে চাকরি করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং ২০১৩ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর থেকে ভুয়া ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিএড সনদপত্র তৈরি করে গছানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে অদ্যাবধি চাকরি করছেন। ভুয়া সনদপত্র দিয়ে চাকরির নামে সরকারি বেতন-ভাতা আত্মসাতের অভিযোগে সহায়তার অভিযোগে বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও ওই বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আনোয়ার হোসেনকে মামলায় তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে।
বাদী মামলার আবেদনে ভুয়া সনদপত্রের ফটোকপি সহ ১০ ধরনের সংযুক্তি উপস্থাপন করেছেন। মামলার কৌশলী এডভোকেট সেলিম মিয়া বলেন, দশমিনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আশিকুর রহমান মামলাটি আদেশের জন্য কার্য তালিকায় নথিভুক্ত করেছেন। এ ব্যাপারে গছানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খবিরুল বশার রিন্টু বলেন, মামলার কথা শুনেছি এসব ব্যাপারে আদালতের মাধ্যমে সবকিছুর জবাব দেয়া হবে। সহকারী গ্রন্থাগারিক মো. মোস্তফা কামাল বলেন, আদালতেই সবকিছু উপস্থাপন করা হবে। গছানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি কাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, অবৈধ সুবিধা না পেয়ে ১০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গছানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ধ্বংস করার জন্য ৫/৬ জনের একটি চক্র এসব মিথ্যা-বানোয়াট মামলা মোকদ্দমা করে আমাদের ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি আর্থিক ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আইনানুগভাবে মামলা মোকাবিলা করা হবে।