কিশোরগঞ্জে করোনাকালে নানা কৌশলে সংঘটিত হচ্ছে বাল্যবিয়ে। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় বাড়ছে ঝরে পড়া ছাত্রীর সংখ্যা। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবার ও সমাজে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে গণমাধ্যম। গতকাল দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বত্রিশ এলাকার পপি-পার্ট কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় আলোচকরা এসব কথা বলেন। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পপি কর্তৃক বাস্তবায়িত নারী ও কিশোরীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ (একাত্ত) প্রকল্প আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রকল্পের আওতাভুক্ত কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল, মারিয়া ও বিন্নাটি, পাকুন্দিয়া উপজেলার চণ্ডিপাশা ও সুখিয়া এবং হোসেনপুর উপজেলার সাহেদল ও পুমদী এই সাত ইউনিয়নের বাল্যবিয়ের প্রবণতা ও পরিস্থিতির ওপর বিশদ আলোচনা করা হয়। এতে নারী ও কিশোরীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ (একাত্ত) প্রকল্পের সমন্বয়কারী মুহাম্মদ ফরিদুল আলম মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে এই সাতটি ইউনিয়নের বাল্যবিয়ে ও সংশ্লিষ্ট পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি জানান, গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের জুন মাস পর্যন্ত এক বছরে সাতটি ইউনিয়নে মোট ১২৮০টি বিয়ে হয়েছে।
এরমধ্যে ৪৯৬টি বাল্যবিয়ে সংঘটিত হয়েছে। ৪৭৩টি বিয়ে যৌতুক এবং ৪০৪টি বিয়ে যৌতুকবিহীন ছিল। প্রকল্পের সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে ৭৫৫টি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে সদরের যশোদল ইউনিয়নে বাল্যবিয়ের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। এরপর হোসেনপুর উপজেলার সাহেদল ও পাকুন্দিয়া উপজেলার চণ্ডিপাশা ইউনিয়নের অবস্থান। এ ছাড়া অসংখ্য রেজিস্ট্রেশনবিহীন বিয়ে হচ্ছে, যার সিংহভাগ নিয়ে পরবর্তীতে নানা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রকল্পের পক্ষ থেকে ৬৬৬ জনকে নানা আইনগত সহায়তা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া পিছিয়ে পড়া নারী জনগোষ্ঠীকে সকল বাধা পেরিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এ প্রকল্প কর্ম এলাকায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মতবিনিময় সভায় প্রকল্পের পাকুন্দিয়া উপজেলা কর্মকর্তা শাহীন হায়দার, সদর উপজেলার কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম, হোসেনপুর উপজেলার কর্মকর্তা সালমা পারভীন, পপি’র প্রোগ্রাম অফিসার আবুল ফজল মো. আহাদ প্রমুখ ছাড়াও জেলা পর্যায়ে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।