× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

১৫ মাসে ১৫১ আত্মহত্যা / শিক্ষার্থীদের কেন কুঁরে খাচ্ছে মানসিক যন্ত্রণা!

মত-মতান্তর

পিয়াস সরকার
১০ অক্টোবর ২০২১, রবিবার

বুধবার রাতের স্ট্যাটাস ‘আই কুইট’। বৃহস্পতিবার মোবাইল স্ক্রিনে ‘স্ট্যাটাস দিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা’। স্ট্যাটাস দেয়া ও আত্মহত্যার মাঝে ছিল ১০ ঘণ্টা সময়। মাঝের এই সময়টা কেমন গিয়েছিল তার? কিংবা কেনই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিলেন?
সম্প্রতি ভিন্ন ছয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার সংবাদ পড়লাম। সবাই ভুগছিলেন মানসিক যন্ত্রণায়। আঁচল ফাউন্ডেশন বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থী ভুগছেন মানসিক যন্ত্রণায়। করোনায় থমকে থাকা সময়টায় লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়েছেন ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর এই সময়টার প্রথম ১৫ মাসে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন ১৫১ শিক্ষার্থী।
উচ্ছ্বাসে মেতে থাকার বয়সটায় শিক্ষার্থীদের কুঁরে খাচ্ছে মানসিক যন্ত্রণা।
শরীরের রোগের যেমন চিকিৎসা আছে তেমনি আছে মানসিক রোগেরও। কিন্তু মানসিক চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটা আমাদের সমাজে ট্যাবু হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমি কয়েকবার মানসিক ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েছিলাম। আমার বন্ধু, অগ্রজ, অনুজও সবারই জানার ভিষণ আগ্রহ। কী বললাম ডাক্তারকে, কী চিকিৎসা দিলো ইত্যাদি।

একটা বিষয় খেয়াল করেছিলাম সে সময়, প্রায় সকলেই বলতেন, আমারও একবার যাওয়া দরকার। কিন্তু ডাক্তারের কাছে তারা যাননি আর কেউই। প্রত্যেকেই শেষে একটা কথা বলতেন, পিয়াস এগুলা আবার কাউকে বলিস না। কেন বলতেন তারা এই কথা? কারণ তাদের ধারণা মানসিক ডাক্তারের কাছে যাওয়া মানেই পাগল। আর অনেকে সমস্যার কথা বলবার পর বলেই বসেন, ডাক্তারের কাছে যাবো কেন, আমি কি তোর মতো পাগল?
করোনাকালে বেশ কয়েকজন বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সংবাদ করেছি। অধিকাংশই কোন না কোনভাবে বলেছেন, ভালো লাগে না, কিছুই ভালো লাগে না।
আজ বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। আজ এমন একটা সময়ে দিনটা উদযাপিত হচ্ছে, যে সময়টায় শিক্ষার্থীদের করোনার থেকেও বেশি আঘাত করেছে মানসিক সমস্যা। আবার একই সময়ে অসহায় শিক্ষার্থীদের বন্ধু না হয়ে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেবার ঘটনাও ঘটেছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে। আঁচল ফাউন্ডেশন বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা যেতে পারে কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা।
করোনা শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরছেন শিক্ষার্থীরা। ভয়াবহ মানসিক যন্ত্রণা কাটিয়ে উঠার এইতো সময়। কিন্তু এই সময়টায় শিক্ষার্থীদের ফের উচ্ছ্বাসে যদি ফেরাতে না পারি বিশাল একটা সংখ্যা মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে বেড়ে উঠবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ। দায়িত্বটা আপনার জায়গা থেকে নিতে হবে যে আপনাকেই। ভাঙতে হবে মানসিক ডাক্তারের কাছে যাওয়া মানেই পাগল ভাবার ট্যাবু।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর