আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নতুন লড়াইয়ে নেমেছেন বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আগ্রহী সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ভোটের মাধ্যমে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্তে উপজেলার ইউপিগুলোতে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ঘুম হারাম। সম্ভাব্য প্রার্থীদের এমন স্নায়ুবিক প্রতিযোগিতায় ‘বেশ মুডে’ আছেন বিভিন্ন ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা। দীর্ঘ সময় থেকে অপমান-লাঞ্ছনায় নীরব থাকা ওয়ার্ডের দায়িত্বশীলরা এবার ক্ষোভ ঝাড়ছেন, মুখ খুলছেন প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে। আর চেয়ারম্যান পদে আগ্রহী প্রার্থীরা অনুনয়-বিনয় করে মান ভাঙ্গানোর চেষ্টা করছেন, বাড়ি-বাড়ি যাচ্ছেন মিষ্টি-ফলমুল-উপহার নিয়ে।
জানা যায়, আগামী নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে বিয়ানীবাজার উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে তৃণমূলে ভোট করার সিদ্ধান্ত নেয় সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ। স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরে নিয়ে এবং দলীয় বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ জাকির হোসেন। তিনি বলেন, দলীয় প্রতীক গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির হাতে তুলে দেয়া হবে।
বিতর্কের ঊর্ধ্বে যিনি থাকবেন এবং যার মাঠপর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা আছে তিনিই হবেন ইউনিয়নে নৌকার কাণ্ডারী।
এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের শৃঙ্খলা এবং নির্বাচনী বার্তা দিতে আগামী ২৩শে অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বিয়ানীবাজারে বর্ধিত সভা করবেন। এই সভায় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত এবং দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের রুপরেখা জানিয়ে দেয়া হবে বলে অপর আরকেটি সূত্রে জানা গেছে। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে উপজেলার সব ক’টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক শৃঙ্খলার বার্তা জানিয়ে বিজয়ের পথও বাতলে দেয়া হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র জানায়, প্রতিটি ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী বাছাইয়ে ভোট দিতে পারবেন। এমন হিসেবে প্রতিটি ইউনিয়নে ২০ জন করে ১০টি ইউনিয়নে ২০০ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এখনকার সময়ে এই ভোটারদের কদর আকাশচুম্বী। শেওলা ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভোর থেকে প্রতিদিন একেকজন প্রার্থী ২-১ বার আসেন। ফোন করে জানতে চান শারীরিক-পারিবারিক কোনো সমস্য আছে কিনা? প্রার্থীদের এমন আচরণে কখনো রাগ ওঠে আবার কখনো ভালো লাগে। লাউতা ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ডের সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাদের ইউনিয়নে নৌকা প্রত্যাশী প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। তাদের যোগাযোগে নিজে খুব আনন্দিত।
যদিও ‘ভোটের আগে এমন ভোট’ নিয়ে মন ভালো নেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের। তারা জেলার এমন সিদ্ধান্তকে বাঁকা চোখে দেখছেন। এতে বাড়তি পরিশ্রম আর টাকা খরচ হবে। কারণ এই ভোটেও নিজের যোগ্যতা প্রমাণে কিছু সংখ্যক ভোটারদের টাকা-পয়সা দিতে হবে। তাই চেয়ারম্যান প্রার্থী অনেকের মন খারাপ। বিয়ানীবাজার উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশতাধিক প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চান। তবে যারা টানা দুই মেয়াদে চেয়ারম্যান ছিলেন, এমন প্রার্থীরা এবার বাদ যাবেন- এ ধরনের অসমর্থিত সূত্রের খবরে নবাগত প্রার্থীদের কারো মুখে আছে হাসির ঝিলিক।