× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কক্সবাজার সৈকতে সম্প্রীতির মিলনমেলা

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার থেকে
১৬ অক্টোবর ২০২১, শনিবার

 কক্সবাজার সৈকতে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। সৈকতের বালিয়াড়িতে প্রতিমা বিসর্জন পরিণত হয়েছিল একটি সার্বজনীন উৎসবে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের মানুষও যোগ দেন এ উৎসবে। মা দুর্গার বিদায়ে কক্সবাজার সৈকতে লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিলনমেলায় পরিণত হয়। গতকাল বেলা আড়াইটা থেকেই কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থান হতে প্রতিমা আসতে শুরু হয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আসা অব্যাহত ছিল। প্রতিমার সঙ্গে ঢাক-ঢোলের তালে তালে, রং মেখে, নাচ-গান করতে করতে অংশ নেন হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বী। দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজার শেষ আনুষ্ঠানিকতায় সাগরপাড়ের যেদিকে চোখ গেছে শুধু মানুষ আর মানুষ। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সৈকতের মুক্তমঞ্চে জেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটি বিজয়া দশমীর বিসর্জন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সভাপতি এডভোকেট রনজিত দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন, জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মো. জিল্লুর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি নজিবুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সদস্য সচিব বাবুল শর্মা। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘কক্সবাজার আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিলন যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে। চক্রান্তকারীদের সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়ে এবারো পূর্বের ধারা অব্যাহত রেখে সৈকতে সম্প্রীতির মিলন মেলা ঘটেছে প্রতিমা বিসর্জনে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের এ চিত্র আমরা আজন্ম লালন করতে চাই। পরবর্তী প্রজন্মও যেন এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখে সেটাই আমাদের প্রচেষ্টায় থাকবে।’ কক্সবাজার সদর উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট বাপ্পী শর্মা বলেন, নব্বই দশক থেকে প্রতিবছর বিজয়া দশমীতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে অনেক মানুষের সমাবেশ ঘটে। করোনা গত বছর সবকিছু স্তব্ধ করে রেখেছিল। কিন্তু এবার পুরনো দিন যেন আবার ফিরে এসেছে। সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে দক্ষিণে সুগন্ধা পয়েন্ট আর উত্তরে হোটেল শৈবাল পয়েন্ট পর্যন্ত দীর্ঘ কয়েক কিলোমিটার সৈকত ছিল লোকে লোকারণ্য। উপস্থিতির মাঝে সনাতন ধর্মাবলম্বীর চেয়ে অন্য ধর্মের মানুষই ছিলেন বেশি। কয়েক স্তরের নিরাপত্তায় এ বছর প্রতিমা বিসর্জনে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল সাগরপাড়ে। বেলা সোয়া ৫টার দিকে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে সাগরপাড়ে সাজানো মঞ্চের গানের তালে তালে দেবী দুর্গাকে সাগরে বিসর্জন দেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। প্রতিমা বিসর্জন উৎসবটি শিশু-কিশোর আর যুবাদের কাছে যেন উৎসব।
তাদের কাছে পূজার অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার চেয়ে আনন্দই মুখ্য। তারা রং ছিটিয়ে ঢোলের তালে তালে নাচছিল। বিসর্জনকালে প্রতিমার সঙ্গে নাচতে নাচতে তারাও নেমে পড়ে সাগরে। অনুষ্ঠানের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে উপস্থিত সব ধর্মের মানুষের মাঝে। জেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সভাপতি এডভোকেট রনজিত দাশ জানান, কক্সবাজার জেলায় ৩০৪টি মণ্ডপে এবার শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এর মাঝে ১৪৯ প্রতিমা ও ১৫৫টি ঘটপূজা। ৩০৪ মণ্ডপের জন্য ১৪৮ টন চাল বরাদ্দ দেয় জেলা প্রশাসন। এবার মা দুর্গা মর্ত্যলোকে আসেন ঘোড়ায় চড়ে, আর দেবলোকে ফিরে যান দোলায় চড়ে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর