১০ বছর আগে পরিবারের অমতে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন সুমিতা বেগম ও সোহেল রানা। এনিয়ে দু’জনের পরিবারের সঙ্গেও ছিল না তেমন যোগাযোগ। আর দীর্ঘ এই সংসারে আসে দুইটি সন্তান। তবে কিছুদিন আগে থেকে তাদের দাম্পত্য জীবনে শুরু হয় কলহ। শেষপর্যন্ত স্বামীর ওপর অভিমান করে ফুটফুটে দুই সন্তানকে গলাটিপে হত্যা করে নিজেই ফাঁসিতে ঝুললেন ২৭ বছর বয়সী এই নারী। গতকাল সকাল ৮টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার পুলিশ
মুহাম্মদপুরের ইসমাইল কলোনির বাসার দরজা ভেঙে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে। ভুক্তভোগীরা হলেন- আয়ুর্বেদিক দোকানের মালিক সোহেল রানার স্ত্রী সুমিতা বেগম (২৭), মেয়ে জান্নাতুল তানজিনা মুন (৭) এবং ছেলে শান বাবু (৩)। এদের মধ্য সুমিতা বেগমের বাড়ি সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলায়।
আর স্বামী সোহেল রানার বাড়ি একই জেলার রামগঞ্জে।
জানা যায়, সুমিতা বেগমের স্বামী সোহেল রানা বাসার পাশে একটি ইউনানি দোকান করেন। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তিনি বাসায় এসে অনেক ডাকাডাকি করার পরও দরজা খোলেননি স্ত্রী। এ সময় সুমিতা বেগমের ব্যবহৃত মোবাইলটিও বন্ধ পান। পরে প্রায় ২ ঘণ্টা অপেক্ষার পর তিনি পাঁচলাইশ থানার পুলিশকে খবর দেন। এরপর সকাল সাড়ে ৬টায় পুলিশ দরজা ভেঙে মা ও দুই শিশু সন্তানের লাশ উদ্ধার করে। এরমধ্যে মা সুমিতা বেগম ও শিশু শানের লাশ ঝুলানো অবস্থায় ছিল। আর মেয়ে মুনের লাশ খাটে পড়ে ছিল। তার এক হাতের রগ কাটা ছিল।
সুমিতা বেগমের ননদের স্বামী নজরুল ইসলাম বলেন, রাত ১১টার দিকে সোহেল রানা (সুমিতা বেগমের স্বামী) আমাকে ফোন দিয়ে জানায় তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে পাওয়া যাচ্ছে না। বাসার দরজাও কয়েক ঘণ্টা ধরে ধাক্কা দিয়েও কোনো সাড়া দিচ্ছে না। পরে আমি তাকে থানায় খবর দিতে বলি। সকালে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তাদের লাশ উদ্ধার করে।
সুমিতা বেগমের পাশের বাসার এক ভাড়াটিয়া বলেন, ওনাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝে-মধ্যে ঝামেলা হতো জানতাম। তবে দুই সন্তানকে মেরে ফেলবে এমন কিছুতো জানি না। তবে সুমিতা বেগম আমাদের কারও সঙ্গে তেমন কথাবার্তা বলতো না। শুনছিলাম ওনার স্বামী অন্য এক নারীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে সোহেল রানার স্ত্রী সুমিতা বেগম এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। কারণ দরজা ভেতর থেকে হুক দেয়া ছিল। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তাদের লাশ উদ্ধার করে। আমরা সুমিতা বেগমের স্বামী সোহেল রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। বিষয়টির কারণ উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছি।