ভক্তদের কাঁদিয়ে কৈলাসে ফিরে গেলেন দেবী দুর্গা। গতকাল বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এর আগে ১১ই অক্টোবর ষষ্ঠী বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গাপূজা। এবার দেবীর আগমন ঘটেছিল ঘোড়ায় চড়ে। কৈলাসে দেবালয়ে ফিরেছেন দোলায় চেপে। গতকাল সকালে বিজয়া দশমীর ‘বিহিত পূজায়’ ষোড়শপ্রচার পূজার পাশাপাশি দেবী প্রতিমার হাতে জরা, পান, শাপলার ডালা দিয়ে আরাধনা করা হয়। সবশেষে দর্পণ বিসর্জনের সময় প্রতিমার সামনে একটি আয়না রেখে তাতে দেবীকে দেখে তার কাছ থেকে সাময়িক সময়ের জন্য বিদায় নেন ভক্তরা। এদিকে সকালে দেবীর অর্চনা শেষে হিন্দু সধবা নারীরা দেবীপ্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে দেন।
তারপর নিজেরা একে অন্যকে সিঁদুর পরান। আয়োজনের অংশ হিসেবে একইসঙ্গে চলে মিষ্টিমুখ করানো ও ঢাকের তালে তালে নাচ-গান। মহামারির কারণে এবারও বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রা হয়নি। গতকাল তিনটা থেকে রাজধানীর ওয়াইজঘাট, তুরাগ, ডেমরা, পোস্তগোলা ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। পূজা উদযাপন পরিষদের নির্দেশনা অনুযায়ী মণ্ডপ থেকে শোভাযাত্রা ছাড়াই দেবী বিসর্জন দিয়েছেন ভক্তরা। প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে গতকাল দুপুর থেকে এসব স্থানে জড়ো হন ভক্তরা। বিকাল ৩টার পর থেকেই এক এক করে দুর্গা প্রতিমাকে বিসর্জন দেয়া হয়। এতে মণ্ডপে-মণ্ডপে বাজে বিষাদের সুর।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সর্বশেষ দেয়া তথ্য অনুসারে জানা যায়, এবার দেশজুড়ে ৩২ হাজার ১১৭ মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এক হাজার ৯০৫টি মণ্ডপ বেড়েছে। ঢাকায় এ বছর দুর্গা পূজা হয়েছে ২৩৮টি মণ্ডপে।
ঢাকা মহানগর পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিশোর রঞ্জন মণ্ডল গণমাধ্যমকে জানান, গতকাল সকাল ৭টা থেকে ৯টা ১১ মিনিট পর্যন্ত বিজয়া দশমীতে ‘বিহিত পূজা’ ও পরে ‘দর্পণ বিসর্জনের’ মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার শাস্ত্রীয় সমাপ্তি ঘটে।