× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মরুর বুকে শীতল উদ্বেগ

প্রথম পাতা

ইশতিয়াক পারভেজ, মাসকাট (ওমান) থেকে
১৬ অক্টোবর ২০২১, শনিবার

ঢাকা থেকে ওমানের ফ্লাইটে উঠতেই ছুটে এলেন বিমানবালা। কোনো ভুল হয়েছে কিনা এমন ভয় নিয়ে তাকালাম তার দিকে। তিনি কোনো ভনিতা না করে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন- ‘আজ কি জিতেছে!’ প্রশ্নটা বুঝতে কিছুটা সময় লাগলেও উত্তরটা তাকে জানিয়ে দিলাম- না বাংলাদেশ আজও হেরেছে। এমন উত্তর    শুনে তার পাল্টা প্রশ্ন তাহলে কেন আপনারা আজ ওমান যাচ্ছেন? তাকে বুঝিয়ে বললাম আসলে বাংলাদেশ প্রস্তুতি ম্যাচ হেরেছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচ ১৭ই অক্টোবর। তবুও  সেই বিমানবালার চোখ থেকে ভয়টা সরে যেতে দেখা গেল না। শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ হারের পর ভক্ত সমর্থকদের চোখে যেন দুশ্চিন্তার কালো ছায়া। আর মরুর বুকে যেন মাহমুুদুল্লাহ রিয়াদের দলের শীতল উদ্বেগ।
বৃহস্পতিবার রাতে একই শঙ্কা আর ভয় দেখা গেল ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খানের মধ্যেও। যদিও তিনি প্রস্তুতি ম্যাচ, দলের সেরা ক্রিকেটাররা খেলেনি বলে উড়িয়ে দিতে চাইলেন। কিন্তু চাপা নিঃশ্বাস লুকিয়ে রাখতে পারলেন না। বলেন, ‘আসলে আমাদের অন্য দলের সঙ্গে দুর্বলতা পাওয়ার প্লেতে। সেখানেই আমরা পিছিয়ে আছি। যদিও প্রস্তুতি ম্যাচ আর আমাদের বেশ কয়েকজন সেরা ক্রিকেটার খেলেনি। আশা করি,  বিশ্বাসও করি বাছাই পর্বের ম্যাচে নিজেদের সেরাটাই খেলবে দল।’

অন্যদিকে হারের দিন রাতেই বাংলাদেশ দল সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ওমানে পৌঁছে। তবে গতকাল অনুশীলন করেনি। আজ অবশ্য ওমানের আল আমেরাত স্টেডিয়ামে অনুশীলন করবে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। পরদিন বিশ্বকাপে বাছাই পর্বের মিশনে প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড। টাইগারদের তুলনায় স্কটিশরা বেশ পিছিয়ে থাকলেও আয়াল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে হারের পর যেন সহজ হচ্ছে না হিসাব-নিকাশ। তার ওপর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ইনজুরি নিয়ে শঙ্কাতো রয়েছেই। যদিও বলা হচ্ছে তিনি এখন ফিট, প্রস্তুতি ম্যাচে না খেললেও বাছাই পর্বে তাকে প্রথম ম্যাচ থেকে পাবে বলে আকরামের বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘আমরা যতটা জেনেছি ওর (রিয়াদ) অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। আমরা আশা করছি প্রথম ম্যাচ থেকেই দল অধিনায়ককে পাবে। সাকিবও আইপিএল শেষ করে যোগ দিবে। আশা করি সেরা দল নিয়ে আমরা প্রথম ম্যাচ খেলতে পারবো।’

বাংলাদেশ বিমানে চেপে আকরাম খান গতকালই ওমানে এসেছেন। রাতে একই ফ্লাইটে থাকা সংবাদকর্মীদের সঙ্গে প্রাণ খুলে কথাও বলতে পারেননি। স্ত্রী আর ছোট কন্যাকে নিয়ে বিজনেস ক্লাসে অনেকটা নীরবেই সময় পার করেন। এরপর বিমান থেকে নেমে খুব দ্রুতই চলে যান। তার এমন অস্থিরতাই বলে দেয় স্বস্তিতে নেই তিনি। ওমান ক্রিকেট বোর্ডের আতিথেয়তায় দ্রুতই  বিমান থেকে নেমে বের হয়ে যান তিনি। অন্যদিকে বাংলাদেশের সংবাদকর্মীদের বিড়ম্বনার শেষ নেই ওমান সফরে। করোনার কারণে  যেন ভয়ে যবুথবু গোটা ওমান। বিশেষ করে মাসকাট বিমানবন্দরে সেই ভয়ের চিত্রটা চোখে পড়ার মতো। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ই-ভিসা চালু করেনি। বিশেষ ব্যবস্থায় ওমানের ভিসা হলেও সেটি পেতেও হাজারটা সমস্যা। আর বিমানবন্দরে নিরাপত্তার বাড়াবাড়িরও শেষ নেই। নতুন ভিসা হলেও লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আঙ্গুলের ছাপ দিতে হচ্ছে আলাদাভাবে। ওমানের স্থানীয় সময় রাত একটা, তখন বাংলাদেশে ঘড়ির কাঁটা তিনটা স্পর্শ করেছে। বাংলাদেশ থেকে আসা ১১ জন সংবাদকর্মীকে নিয়ে যাওয়া হলো শুধু আঙ্গুলের ছাপ নিতে। কারণ, ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তা কাউকেই  বোঝানো গেল না আসলে ক্রিকেট বিশ্বকাপের গুরুত্ব কোথায়। বেশির ভাগ ওমানবাসী জানে না আসলে বিশ্বকাপ কবে শুরু হচ্ছে। যারা জানে তাদেরও খুব বেশি বিশ্বকাপ নিয়ে উৎসাহ নেই। সংবাদকর্মী ও বিশ্বকাপ কাভার করতে আগমনের কথা বলার পরও আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে তবেই ইমিগ্রেশন করার সুযোগ দেন তারা।

এখানেই শেষ নয় বিড়ম্বনার। গতকাল ওমান আল আমেরাত স্টেডিয়ামের নিরাপত্তাকর্মীরাও বাংলাদেশের সাংবাদিকদের বাধা দেন। প্রায় তিন ঘণ্টা তপ্ত রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পরে অবশ্য আইসিসি’র সহযোগিতায় মেলে  এক্রিডিটেশন কার্ড। এমন বিড়ম্বনার পর বোঝা যায়, মাঠে ব্যাটে-বলে খেললেও ওমানে ক্রিকেট নিয়ে আবেগ নেই, যেটা আছে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের!
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর