টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের কাছে দুই হার শঙ্কা জাগাচ্ছে। আইপিএল ব্যস্ততায় ম্যাচ দুটিতে ছিলেন না সাকিব আল হাসান। টাইগার অলরাউন্ডার ‘বিশ্বকাপ প্রস্তুতি’ নিয়েছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সে। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দলের মতো বিবর্ণ সাকিবের পারফরমেন্সও। গতকাল ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে ২৭ রানে হেরে শিরোপার স্বাদ পাওয়া হয়নি কলকাতার। ব্যাটে-বলে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি সাকিব। বোলিংয়ে ৩ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। ব্যাটিংয়ে ভালো কিছুর সুযোগ পেয়েছিলেন।
ফিরেছেন ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরে।
ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল ফিট হলেও সাকিবের উপর আস্থা রাখে কলকাতা। বোলিং ওপেন করতে এসে শুরুটা মন্দ করেননি। প্রথম ওভারে দেন ৬ রান। ৫৯ বলে ৮৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দেয়া ফাফ দু প্লেসি ফিরতে পারতেন সাকিবের ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারেই। ২ রান নিয়ে ব্যাট করছিলেন এই প্রোটিয়া ব্যাটার। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে সাকিবকে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টা করেন দু প্লেসি। বুঝতে পেরে লেগ স্টাম্পের বাইরে বল ফেলেন সাকিব। গ্লাভসে বল জমাতে ব্যর্থ হন উইকেটরক্ষক দিনেশ কার্তিক। আগের ম্যাচেই সাকিবের বলে স্টাম্পিং মিস করেন এই ভারতীয় কিপার। জীবন পেয়ে ফাইনালসেরা ইনিংস খেলেন দু প্লেসি। মাত্র ২ রানের জন্য হতে পারেননি আইপিএলের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। এই প্রোটিয়া তারকাই ফাইনালের পার্থক্য গড়ে দেন।
পাওয়ার প্লেতে ২ ওভারের স্পেলে সাকিব দেন ১৮ রান। দশম ওভারে আবারো আক্রমণে এসে আরো খরুচে ছিলেন সাকিব। ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে ১৫ রান দেন তিনি।
বোলিংয়ের হতাশা ব্যাট হাতে পুষিয়ে দেয়ার সুযোগ ছিল সাকিবের। আগের ম্যাচে ফিরেছিলেন শূন্য রানে। ফাইনালে সাকিবের কাছ থেকে রানের প্রত্যাশা ছিল কলকাতার। সাকিব সাত নম্বরে নামার সময় কলকাতার প্রয়োজন ছিল ৩১ বলে ৭৪ রান। কঠিন সমীকরণের অঙ্ক মেলাতে পারেননি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিয়ের দ্বিতীয় সেরা এই অলরাউন্ডার। রবিন্দ্র জাদেজার বলে দৃষ্টিকটু এক শটে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফেরেন। জাদেজার নিরীহ ডেলিভারিতে ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে পায়ে বল লাগান সাকিব।
আইপিএলের আরব আমিরাত পর্বে সাকিব খেলেছেন ৫ ম্যাচ। ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন তিন ইনিংসে। এর দুটিতেই ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই। কেবল এক ইনিংসে করেন ৬ বলে অপরাজিত ৯ রান। আমিরাত পর্বে পাঁচ ইনিংসে হাত ঘুরিয়েছেন ১৬ ওভার। ১০৫ রান খরচায় সাকিবের শিকার ২ উইকেট। সাকিব বেশিরভাগ সময়েই বোলিং করেছেন নতুন বলে। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৬.৫৬ করে। পরিসংখ্যান দারুণ হলেও শেষ দুই ম্যাচে সাকিবের পারফরমেন্স বিবর্ণ। ব্যাটিংয়ে দুই ইনিংসেই ফিরেছেন শূন্য রানে। শেষ দুই ইনিংসে ৭ ওভারে রান দিয়েছেন ৬১। ইকোনমি ৮.৭১ হলেও উইকেটের ঘর শূন্য থাকতো না সাকিবের। যদি না এই দুই ম্যাচে সহজ দুটি স্টাম্পিং মিস না করতেন দিনেশ কার্তিক।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সব আসরে খেলা ক্রিকেটারদের অন্যতম সাকিব। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা পারফরর্মারও তিনি। কুড়ি ওভারের বিশ্বমঞ্চে ২৫ ম্যাচ খেলেছেন। ১২৮.৮৬ স্ট্রাইক রেটে করেন ৫৬৭ রান। ফিফটি ৩টি। ৬.৬৫ ইকোনমিতে নিয়েছেন ৩০ উইকেট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যৌথভাবে পঞ্চম সর্বোচ্চ উইকেট সাকিবের। সবচেয়ে বেশি ৩৯ উইকেট সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদির।