সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করে গতকাল মালে থেকে ঢাকায় ফিরেছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। এই ব্যর্থতার মাঝেও সুখবর পেয়েছেন ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে তিনি ডাক পেয়েছেন ইন্ডিয়ার সুপার লীগ (আইএসএল)-এর ক্লাব নর্থ ইউনাইটেড এফসিতে। এর আগে অ্যাটলেটিকো দি কলকাতায় সুযোগ পান জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম মামুন। যদিও কলকাতার জার্সি পরে মাঠে নামার সুযোগ হয়নি তার। তবে নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসির কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছেন তপু। প্রস্তাব পেয়েই মাঠে নামার নিশ্চয়তা চেয়েছেন বসুন্ধরা কিংসের এই অধিনায়ক।
২০১৪ সালে যশোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় তপুর।
এরপর টানা সাত বছরে জাতীয় দলের হয়ে প্রায় ৫০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন এই ডিফেন্ডার। রক্ষণ সামলানোর পাশাপাশি পাঁচটি গোলও করেছেন তিনি। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দারুণ এক গোল করে দলকে এক পয়েন্ট দিয়েছিলেন এই ফুটবলার। সবশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও ধারাবাহিক ভাবে ভালো খেলেছেন এই ডিফেন্ডার। তার গোলেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আসরে একমাত্র জয় পায় বাংলাদেশ। এই ধারাবাহিকতার পুরস্কার হিসেবেই নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসিতে খেলার প্রস্তাব পেয়েছেন তপু। দলটির কোচ আহমেদ খালিদ জামিল সরাসরি তপুকে তার দলে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেন।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড। গত মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে দলটির দায়িত্ব নেন খালিদ জামিল। হাঁটুর চোটের কারণে মাত্র ৩২ বছর বয়সে ফুটবল ছেড়ে কোচিং শুরু করেন তিনি। টানা ছ’টি মওসুম মুম্বই এফসিতে থাকার পরে যোগ দেন মিজোরাম আইজল এফসিতে। ২০১৬-’১৭-তে অভিষেকের মওসুমেই একঝাঁক তরুণ ও অখ্যাত ফুটবলারকে নিয়ে দলকে আই লীগে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন খালিদ। ভারতীয় জাতীয় দল থেকে ক্লাব ফুটবলÑ সর্বত্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ফুটবলারদের দাপট। অথচ সর্বভারতীয় আসরগুলোতে সেভাবে এই অঞ্চলের ক্লাবের সাফল্য ছিল না। আইজলকে আই লীগ জিতিয়ে সেদিন খালিদ শুধু ইতিহাস গড়েননি, প্রমাণ করেছিলেন পরিকল্পনা নিখুঁত হলে যেকোনো ক্লাবকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সেই দর্শন নিয়েই প্রথম ভারতীয় কোচ হিসেবে নর্থ ইস্টকে আইএসএলের শেষ চারে তুললেন তিনি। এবার শিরোপায় চোখ রেখেই দল সাজাতে চাইছেন খালিদ। এ কারণেই ব্যাকলাইন শক্তিশালী করতে তপুকে দলে ভেরাতে চাইছেন কুয়েতে জন্ম নেয়া এই ভারতীয় কোচ। এ প্রসঙ্গে তপু বলেন, বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে আফগানিস্তানের ম্যাচ শেষে খালিদ আমার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। সাফের সময় এই যোগাযোগ আরও বাড়িয়েছেন। প্রায় প্রতিদিন আমাকে মেসেজ করছেন। ও দ্রুত আমাকে সিদ্ধান্ত জানানোর অনুরোধ করেছে। আমি দেশে ফিরে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেছি’। বেতনের বিষয়ে জানতে চাইলে বসুন্ধরা কিংসের এই ডিফেন্ডার বলেন, টাকা পয়সা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। তবে ওরা আমাকে জানিয়েছে, ‘এখানকার চেয়ে বেশি পারিশ্রমিক দেবে। তবে আমি বেতন নিয়ে ভাবছি না। শুধু আইএসএল না ১০ হাজার ডলার বেতনে কাতার সেকেন্ড ডিভিশনের একটি ক্লাবে প্রস্তাব আছে তপুর। এ বিষয়ে ২৬ বছর বয়সী তপু বলেন, এক এজেন্ট আমাকে কাতারে খেলার প্রস্তাব দিয়েছে। বলেছেÑ আমি রাজি থাকলে বেতন আরও বাড়িয়ে দেয়া হবে। দুই প্রস্তাব নিয়েই আমি ভাবছি।’ বসুন্ধরা ছাড়বেন কিনা জানতে চাইলে তপু বলেন, সবকিছু এখনো প্রাথমিক অবস্থায় আছে। সবে মাত্র ওরা প্রস্তাব দিয়েছে। এ নিয়ে আমি আমার ক্লাব ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বসবো। তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবো। তবে আমি দেশের বাইরে খেলতে চাই।