রুথ হ্যামিলটন। থাকেন কানাডার গোল্ডেন নামের শহরে। দিব্যি শুয়েছিলেন বিছানার ওপর। হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখলেন তাঁর বিছানায় পড়ে রয়েছে একখণ্ড পাথর। ঘরের ছাদ ভেঙে সেটি এসে পড়েছে বিছানায়। চারদিকে ছড়িয়ে রয়েছে কাঁকর, ধুলো।সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন তিনি। ওই মহিলার বাড়ির কাছেই একটি নির্মাণকাজ চলছিল। তাই প্রথমে ভাবা হয়েছিল, বোধ হয় নির্মাণাধীন ওই ভবন থেকেই পাথরটি এসেছে।
যদিও পরে নির্মাণ শ্রমিকেরা বলছেন, ওই সময়ে ওই নির্মাণস্থলে কোনও কাজ চলছিল না। বরং আকাশে একটি বিস্ফোরণ দেখেছেন তাঁরা। এর পরই বোঝা যায় পাথরটি আসলে একটি উল্কাপিণ্ড। এটির ওজন ছিল প্রায় ১.৩ কিলোগ্রাম, প্রায় একটা তরমুজের সমান। হ্যামিলটন জানাচ্ছেন , পোষা কুকুরের ডাকে আচমকা ঘুম ভেঙে যায় তার পর বালিশ সরিয়ে দেখেন দুটি বালিশের মাঝে একখণ্ড পাথর। হ্যামিলটন বলেন- জীবনে তিনি কখনো এতটা ভয় পাননি। কয়েক ঘণ্টা বসেছিলেন, হাত-পা কাঁপছিল। পরে ধাতস্থ হয়ে জরুরি পরিষেবার নম্বরে ফোন করেন।পুলিশ এসে ওই পাথরের টুকরো উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ওই পাথর আসলে একটি উল্কার টুকরো। এবং তা কয়েক কোটি বছরের পুরনো। এই ঘটনা নিয়ে রুথ সংবাদমাধ্যম সিবিসি -কে বলেছেন, ‘‘কী ঘটেছে তা বুঝতে না পেরে খুব ভয় পেয়েছিলাম। ভাবছিলেন পাথরটা ফেটে যাবে কি না। কপাল জোরে আমি দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি।’’শেষমেশ জানা যায়, কানাডার দক্ষিণাঞ্চলের আকাশে সেই রাতে উল্কাবৃষ্টি ঘটেছিল। তবে এর জেরে তাঁর নিজের বা অন্য কারও যে বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি এতেই সন্তুষ্ট হ্যামিলটন। পাথরটিকে এখন সংরক্ষণ করার কথা ভাবছেন তিনি। একেই হয়তো বলে কপালের জোর।কানাডা জুড়ে গবেষকরা এখন এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের উল্কাপাতের অতিরিক্ত ফুটেজ সংগ্রহের জন্য তাদের নিজস্ব ড্যাশবোর্ড বা নিরাপত্তা ক্যামেরা পরীক্ষা করার অনুরোধ জানিয়েছেন। ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রহ বিজ্ঞানী অ্যালান হিলডেব্র্যান্ড এক বিবৃতিতে বলেন, ' এই অঞ্চলে আরও কয়েক ডজন উল্কা পতিত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে , সেই জন্য বাসিন্দাদের সজাগ থাকতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে এই ধরণের উল্কাপাতকে বিরলতম বলছেন কানাডার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এর আগে ১৯৫৪ সালে আলবামার এক মহিলার কোমরের ওপর ঠিক হ্যামিল্টনের মতোই ঘুমন্ত অবস্থায় উল্কাপিন্ড এসে পড়েছিল।
সূত্র: cnet.com