ফেনীতে তিনটি মন্দির ও বেশ কয়েকটি দোকানপাটে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। র্যাব ও পুলিশ এ নিয়ে মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার সন্ধ্যায় ফেনীর জুডিসিয়াল ম্যাজস্ট্রেট আদালতে ৫ জনকে পাঠিয়ে প্রত্যেককে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনির হোসেন।
পুলিশ জানায়, রোববার রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ফেনী পৌরসভার মাস্টারপাড়ার আবদুল মান্নান (৪৬), ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের পূর্ব মোটবী গ্রামের এনামুল হক রাকিব (২০) ও ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দক্ষিণ ডেমরা এলাকার মো. মিরাজকে (৩৩) গ্রেপ্তার করে। এর আগে র্যাব ফেনী পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম রামপুরের বাসিন্দা আহনাফ তৌসিফ মাহমুদ লাবিব (২২), কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থানার আমান সরকার বাজার এলাকার ফয়সল আহম্মেদ আল আমিন (১৯) ও ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের হাফেজ আবদুস সামাদ জুনায়েদকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনকে আদালতে পাঠিয়ে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।
র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার তৌসিফ মাহমুদ লাবিবকে উস্কানিদাতা, হামলার পরিকল্পনাকারী ও নাশকতাকারীদের হোতা হিসেবে উল্লেখ করেছে র্যাব।
র্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী অধিনায়ক, সহকারী পরিচালক, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. জুনায়েদ জাহেদ জানান, লাবিবকে জিজ্ঞাসাবাদে সে র্যাবকে জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় ফেনী বড় মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে তাঁর দুই বন্ধু মুন্না ও সফীকে নিয়ে হাতে এক বোতল পেট্রোলসহ কালীমন্দিরে যান। সেখানে মন্দিরের পুরোহিতকে মারধর ও মন্দিরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। এ ঘটনায় র্যাব ফেনী ক্যাম্পের সুবেদার (বিজিবি) মো. কামাল হোসেন বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা করেন।
এদিকে সোমবার চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন ফেনীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির, আশ্রম পরিদর্শন করেন।
চট্টগ্রামের ডিআইজির ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, একটি প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এসব হামলা করছে। পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন বলেন, শনিবারের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা দুই মামলায় প্রায় ৪০০ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার দিন ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আসামি চিহ্নিত করার কাজ করছে পুলিশ।