অনলাইন

সেপ্টেম্বরে আরও বাড়লো মূল্যস্ফীতি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২০২১-১০-২১

চলতি অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। আগের মাস আগস্টে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ। জুলাইয়ে হয়েছিল ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে খাদ্য এবং খাদ্য বহির্ভূত উভয় খাতেই বেড়েছে মূল্যস্ফীতি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বৃহস্পতিবার মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

গত ২০২০-২১ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এরপর থেকে প্রতি মাসেই বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। যদিও চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরেছে সরকার। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে এই লক্ষ্য ধরা ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু অর্থবছর শেষ হয় ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি নিয়ে। অর্থাৎ বাজেটের লক্ষ্যের চেয়ে বেশি ছিল গড় মূল্যস্ফীতি। আর চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে প্রতি মাসেই বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। সেপ্টেম্বর মাসে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। অর্থাৎ, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যে পণ্য বা সেবার জন্য ১০০ টাকা খরচ করতে হতো, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সেই পণ্য বা সেবার জন্য ১০৫ টাকা ৬০ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ২১ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। আগের মাস আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ১৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ১৩ শতাংশ।

সেপ্টেম্বর মাসে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আগস্টে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে শহরাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। আগস্টে হয়েছিল ৫ দশমিক ২২ শতাংশ।

বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এই মাসে শহর এলাকায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৪ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির হ্রাস-বৃদ্ধি পর্যালোচনায় বিবিএস বলেছে, আগস্ট মাসের তুলনায় সেপ্টেম্বরে চাল, আটা-ময়দা, চিনি, ব্রয়লার মুরগি, ডিম, সবজিসহ প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দামই বেড়েছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করার পর থেকেই বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য বাড়ছে। সেইসাথে পরিবহন খরচও বাড়ছে। সব মিলিয়ে সব দেশেই মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। তার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশসহ ছোট-বড় সব দেশে। আগামী দিনগুলোতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

এদিকে, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফসহ বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছে, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে। সম্প্রতি প্রকাশিত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতিও বাড়বে। এদিকে, আইএমএফ বলছে, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এবার তা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৫ দশমিক ৮ শতাংশে।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status