প্রকাশ্য দিবালোকে আরিফুল ইসলাম রাহাত নামের এক কলেজ ছাত্রকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে দক্ষিণ সুরমা কলেজের ফটকের কাছে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দক্ষিণ সুরমা। সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ ছাড়াও দফায় দফায় বিক্ষোভ করেছে দক্ষিণ সুরমা কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী। এতে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। আরিফুল ইসলাম রাহাত দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে ছাত্রলীগের কর্মী বলে তার সহপাঠীরা জানিয়েছেন। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার পুরাতন তেতলি এলাকার সুরমান আলীর ছেলে রাহাত।
স্বজনরা জানিয়েছেন- সকালে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয় রাহাত। সঙ্গে ছিল রাফি নামের তার এক সহপাঠী। দুপুরে সে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে দক্ষিণ সুরমা কলেজের ভেতর যায়। কলেজ থেকে বের হওয়ার সময় কলেজের মূল গেট থেকে ২০-২৫ গজ ভেতরে সাদি নামের একজন মোটরসাইকেলযোগে পেছন থেকে রাহাতকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। সাদির সঙ্গে আরেকজন ছিল। ছুরিকাঘাতের পর তারা পালিয়ে যায়। পরে রাহাতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে মৃত্যুর খবর শোনা মাত্র রাহাতের স্বজনরা হাসপাতালে ভিড় জমান। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। রাহাতের মা ও পরিবারের সদস্যদের কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে ওসমানী হাসপাতাল এলাকা। ছেলের নাম ধরে অঝোরে কাঁদছেন রাহাতের মা। সঙ্গে কাঁদছেন তার চাচা ও ভাইবোন। দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি কামরুল হাসান তালুকদার জানিয়েছেন- কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ। সাদিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নিহত রাহাত কলেজ ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় কলেজে ৩ দিনের জন্য পাঠদান বন্ধের নোটিশ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে পরীক্ষা চলবে। কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করবে। এছাড়াও আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম। এদিকে, রাহাত হত্যার ঘটনায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সড়ক অবরোধ করেন তারা। এ সময় রাহাতের হত্যাকারীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা। পরে দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি কামরুল হাসান তালুকদারের আশ্বাসের ভিত্তিতে দুই ঘণ্টা পর তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা। দক্ষিণ সুরমা কলেজের মূল ফটকসহ দক্ষিণ সুরমা কলেজে পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।