দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার উৎস জানতে গণতদন্ত কমিটি বা নাগরিক কমিশন গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে নাগরিক প্রতিবাদ সভা থেকে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মানবাধিকারকর্মী ড. হামিদা হোসেন। এতে বিশিষ্টজনেরা আলোচনায় অংশ নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছিল ধর্মনিরপেক্ষ হবে বলে। এখন আমরা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলতেও সাহস পাই না। আমরা বড়জোর অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলতে পারি। তিনি বলেন, পরিস্থিতি যে এত ভয়াবহ, তা আমরা অনুধাবন করতে পারিনি। যারা এই অপরাধ করেছে, তাদের বিচার করতে হবে।
সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, হিন্দুদের মন্দির, বাড়ি, দোকানপাটে হামলায় পুলিশ কোথাও ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা মানে এর বিচার হবে না। কোনোভাবেই এর বিচার শেষ করা সম্ভব হবে না। ঘটনা ঘটিয়েছে এমন মূল ১০ জনকে আসামি করে মামলা করলে এর বিচার সম্পন্ন করা সম্ভব হতো।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, দেশের চারটি জেলার প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। জানতে পারলাম, প্রতিটি পূজামণ্ডপে আনসার ছিল দুজন। প্রথমে তারা মোবাইল ছিল। আনসাররা মোবাইল থাকবে, সেটা আমি কোনো দিন শুনিনি।
বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমাদের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সংবিধান, আইনের শাসন এই চারটি জায়গাতে মারাত্মক বিপর্যয়ের মধ্যে আছি আমরা। দেশে ভিন্ন পরিচয়ের, ভিন্নমতের কোনো জায়গা রাখা হয়নি।
এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের সংবিধানে ধর্ম এসেছে, রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার এসেছে। পরবর্তীকালে দেশে সংকীর্ণ রাজনীতির স্বার্থে ধর্মীয় অপশক্তির সঙ্গে যেসব মীমাংসা হয়েছে বা প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে, সেই প্রবণতার কারণে আজকে এই পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ড. সারওয়ার আলী, সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্মল রোজারিও, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।