করোনার ডেল্টা প্রজাতির বাড়বাড়ন্তের কারণে গত বছরের শেষের দিকে মেলবোর্নে ষষ্ঠবারের জন্য লকডাউন করা হয়। প্রশাসনের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল যে, ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে ৭০ শতাংশ মানুষের দুটো ডোজ হয়ে গেলে লকডাউন তুলে নেওয়া হবে। সেই প্রতিশ্রুতি মতোই অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরটি থেকে তুলে নেওয়া হল লকডাউন। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিশন জানান, তারা লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছেন। এরপরই লকডাউন উঠিয়ে নেওয়ার ঘোষণা করেন তিনি। গোটা মেলবোর্ন এখন এই স্বাধীনতার আনন্দে মাতোয়ারা। কারণ, দীর্ঘ ২৬২ দিনের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন মেলবোর্নবাসী। বৃহস্পতিবার থেকেই মেলবোর্নে খুলে গিয়েছে পানশালা, রেস্তোরাঁ, ক্যাফে।
সেই সঙ্গে পাবগুলিতে বাড়ানো হচ্ছে বিয়ারের যোগান। তবে দোকান, শপিং মল এখনও খুলছে না বলেই জানা গিয়েছে। সম্ভবত নভেম্বরের শুরুতে খুলে যেতে পারে দোকান, শপিং মল। সকলের জন্য এখনও মাস্ক বাধ্যতামূলক রয়েছে। অতিথিদের বাড়িতে প্রবেশের ক্ষেত্রেও কিছু বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। Medicare Express অ্যাপে দেখা যাবে যাদের দুটো করে টিকা নেওয়া রয়েছে, তাঁরাই কারও বাড়িতে প্রবেশ করতে পারবেন। বাড়ির অন্দরে সর্বোচ্চ ১০ জনকে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে। বাড়ির বাইরে সর্বোচ্চ ১৫ জনকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যাবে। মরিসন বৃহস্পতিবার সেভেন নিউজকে বলেন, "ভিক্টোরিয়ায় দীর্ঘতম রাস্তাটি ভ্রমণের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে ।" আউটডোরে ৫০ জনকে নিয়ে এবং ইন্ডোরে ২০ জনকে নিয়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠান, বিবাহ অনুষ্ঠান এবং সৎকারের মতো অনুষ্ঠান করা যাবে। ৩ থেকে ১১ বছরের শিশুদের জন্য খুলতে চলেছে স্কুল। এদিকে ব্যবসায়ীরা গ্রাহকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হওয়ায় বৃহস্পতিবার ভিক্টোরিয়ায় দৈনিক সংক্রমণ বেড়ে ২,২৩২ -এ পৌঁছেছে, যা মহামারী চলাকালীন অস্ট্রেলিয়ার যে কোনো অঞ্চলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দৈনিক গণনা। ব্যাপকহারে টিকাকরণ সম্পন্ন হবার পর অস্ট্রেলিয়া এখন ভাইরাসের সাথেই বেঁচে থাকার লক্ষ্য নিয়েছে। ডেল্টা ভেরিয়েন্টের আক্রমণ সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া প্রায় ১ লক্ষ ৫২ হাজার সংক্রমণএবং ১,৫৯০ মৃত্যু দেখেছে , যা অনেক দেশের তুলনায় অনেক কম। মেলবোর্ন মুক্তির স্বাদ পেলেও ভাইরাসমুক্ত কুইন্সল্যান্ড রাজ্য দুই সপ্তাহের মধ্যে তার প্রথম নতুন স্থানীয় কেস রিপোর্ট করার পর সতর্ক রয়েছে। রাজধানী সিডনি এবং ক্যানবেরা গত সপ্তাহে তাদের ভ্যাকসিনেশন লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানোর পর লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসে। অন্যান্য রাজ্যগুলিও কোভিড-মুক্ত হবার পথে ।
সূত্রঃ রয়টার্স