খুলনায় এক কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তার রেলওয়ের নিরাপত্তা শাখার সিপাহি মো. নুরুজ্জামান খান সুজনের বিরুদ্ধে ঘটনার ৪ দিন পরও বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তবে ঘটনার দিন থেকে তাকে সাসপেন্ড করাসহ অভিযোগ প্রমাণিত হলে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া শাখার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে রেলস্টেশন সংলগ্ন জবেদের হোটেলের সামনে থেকে মো. নুরুজ্জামান খানকে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে ৮৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে খুলনা সদর থানায় মামলা দায়ের করে আসামিকে আদালতে সোপর্দ করলে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
সূত্র জানায়, এই প্রথম রেলের নিরাপত্তা শাখার কোনো কর্মী মাদকসহ গ্রেপ্তার হলো। এ নিয়ে চরমভাবে বিব্রত বিভাগের অন্য সহকর্মীরা। সূত্রের অভিযোগ, রেলস্টেশন কলোনি ও সংলগ্ন একাধিক বস্তি নানা ধরনের অপরাধের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
গাঁজা, ইয়াবা ও ফেনসিডিলসহ সব ধরনের মাদকের ছড়াছড়ি এখানে। ভারত থেকে চোরাই পথে আসা অবৈধ মালামালও এখানে খালাস হয়। স্থানীয় একটি যুব সংঘকে সামনে রেখে শক্তিশালী একটি চক্র প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মাদক ও ভারতীয় পণ্য কেনাবেচা করে। মূলত: বেনাপোল থেকে খুলনাগামী বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেনে মাদকের চালানগুলো খুলনায় আসে। আর এই চালান পাঠানো নিয়ন্ত্রণ করে বেনাপোলে কর্মরত রেলওয়ের একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। সুজন এই চক্রের একজন সদস্য। রেলের নিরাপত্তা বিভাগের চিফ ইনসপেক্টর মুনীর হোসেন রাহাত জানান, মাদকসহ গ্রেপ্তার সুজন ১৫ই অক্টোবর থেকে ৫ দিনের ছুটি নিয়েছিল। ছুটিতে থাকা অবস্থায় ১৭ তারিখ রাতে সে গ্রেপ্তার হয়। ১৯ তারিখ তার ছুটি শেষ হয়েছে। ঘটনা জানিয়ে আমি পাকশী হেড অফিসে চিঠি দিয়েছি। ডিবি’র ওসির কাছে মামলার নথি চেয়েছি। নথি পেলে এবং পাকশী থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ পাওয়া মাত্র সুজনকে ১৭ তারিখ থেকে সাসপেন্ড করা হবে। এ ছাড়া মামলায় সাজা হলে বিভাগীয় সর্বোচ্চ শাস্তি চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে হবে।
রেলের নিরাপত্তা শাখায় চাকরিরত সুজনের আপন ভাই মো. রাহাদুজ্জামান খান লিখন বলেন, আমার ভাইকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। নতুন রেলস্টেশন থেকে পুরান রেলস্টেশনে আসার পথে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ও প্রমাণ ছাড়াই পুলিশ তাকে আটক করেছে। এক নেতার সঙ্গে তাদের বিরোধ আছে। তিনিই এ কাজ করিয়েছেন বলে মনে করেন লিখন। ‘প্রভাতী যুব সংঘ’ রেলে কর্মরতদের একটি সামাজিক সংগঠন, এর মাধ্যমে সমাজসেবামূলক কার্যক্রম চলে। সংঘের সভাপতি লিটু সুলতানের পোস্টিং বেনাপোলে। তাদের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে কেউ অপবাদ দিচ্ছে বলে দাবি তার।