× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জীবনরক্ষাকারী ইনজেকশন নিয়ে বাণিজ্য

প্রথম পাতা

সিরাজুস সালেকিন
২৪ অক্টোবর ২০২১, রবিবার
প্রতীকী ছবি

জীবনরক্ষাকারী ইনজেকশন ইন্টেগ্রিলিন নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চলছে অনৈতিক বাণিজ্য। বাজারমূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে এই ইনজেকশন। এই অতিরিক্ত মূল্য যাচ্ছে চিকিৎসক ও ক্যাথ ল্যাবের কর্মীদের পকেটে। কখনও ইনজেকশন ব্যবহার না করেই বিল করা হচ্ছে রোগীদের নামে। প্রকাশ্যে এমন অনৈতিক বাণিজ্য চললেও নিশ্চুপ কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, একটি সিন্ডিকেট এই ইনজেকশন রোগীদের ক্যাথ ল্যাব থেকে কিনতে বাধ্য করছে। দেশের চিকিৎসা শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এমন অনৈতিক বাণিজ্য চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হৃদরোগীদের এনজিওগ্রাম ও রিং পরানোর (স্টেন্টিং) সময় জটিল রোগীদের ইন্টেগ্রিলিন ইনজেকশনটি দেয়া হয়ে থাকে।
কখনও কখনও এটি জীবনরক্ষাকারী ইনজেকশন হিসেবে কাজ করে।  বিএসএমএমইউ’র কার্ডিওলজি বিভাগের অধীনে পরিচালিত ক্যাথ ল্যাবে সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইনজেকশনটি রোগীরা বাইরে থেকে কিনতে পারেন না। এটি ক্যাথ ল্যাবে আগে থেকেই মজুত থাকে। প্রয়োজন হলে রোগীদের সেখান থেকে নিয়ে ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরবর্তীতে রোগীরা বিল পরিশোধের সময় অন্যান্য বিলের সঙ্গে ইনজেকশনের বিলও পরিশোধ করেন। দেশীয় একটি কোম্পানি ছাড়াও বাইরে কয়েকটি কোম্পানি এই ইনজেকশন বাজারজাত করে। ইন্টেগ্রিলিন নামক ওই ইনজেকশনটির ১০০ মিলির ভায়াল বাজারে বিক্রি হয় ৯ হাজার টাকায়। আর ১০ মিলির ভায়ালের বাজারমূল্য ৩ হাজার টাকা। সরাসরি কোম্পানি থেকে কিনলে ইনজেকশন আরও কম দামে পাওয়া যায়। একজন রোগীর জন্য কত মিলি’র ভায়াল প্রয়োজন তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। কিন্তু বিল পরিশোধের সময় রোগীকে ১০০ মিলির ভায়ালের বিল ধরিয়ে দেয়া হয়। আর এই ভায়ালের দাম রাখা হয় ১০ হাজার টাকা। যা বাজার মূল্যের (এমআরপি) চেয়ে ১ হাজার টাকা বেশি। আর আদৌ রোগীকে ইনজেকশনটি পুশ করা হয় কিনা তা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে রোগীদের। ক্যাথ ল্যাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৭/৮ জন রোগীর এনজিওগ্রাম ও স্টেন্টিং করা হয়। আর এই রিং (স্টেন্ট) ইনজেকশন সরবরাহের কাজ করে কার্ডিয়াক কেয়ার লিমিটেড, অ্যাডভান্সড মেডিটেক, বায়োভাস্কুলার লিমিটেড, কার্ডিয়াক সলিউশনসহ প্রায় ১৯টি প্রতিষ্ঠান। রিংয়ের মূল্য তালিকা হাসপাতাল থেকে নির্দিষ্ট করে দেয়া হলেও ইনজেকশনের বিষয়ে কোনো নীতিমালা নেই। গত জানুয়ারিতে বিএসএমএমইউ’র ক্যাথ ল্যাবে রিং পরিয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক রোগী। বায়োভাস্কুলার লিমিটেডের কাছ থেকে তিনি রিং ও ইনটেগ্রিলিন ইনজেকশন কিনেছিলেন। তিনি ইনজেকশন বাবদ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছিলেন। ওই বিলের কপিতে দেখা গেছে, সেখানে রেফারেন্স হিসেবে একজন প্রফেসর পদমর্যাদার চিকিৎসকের নাম উল্লেখ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ইনজেকশনের বাড়তি মূল্যের একটি অংশ রেফারেন্সে উল্লেখ থাকা চিকিৎসকের পকেটে যায়। আর ইনজেকশন যদি ব্যবহার না হয় সেক্ষেত্রে বিল দেখিয়ে রোগীদের কাছে টাকা আদায় করা হয়। কখনও বা ১০০ মিলি’র ভায়াল ভাগ করে একাধিক রোগীকে পুশ করা হয়। কিন্তু বিল করা হয় পুরো ভায়ালের। এই বিলের টাকা ক্যাথ ল্যাবের কর্মচারীরা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। টাকার একটা অংশ যায় কনসালটেন্ট চিকিৎসকদের পকেটে। এ বিষয়ে বিএসএমএমইউ’র কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. একেএম ফজলুর রহমান বলেন, ইনজেকশনের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার কথা। তিনি মাত্র কিছুদিন আগে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন। বাড়তি মূল্যে বিক্রয়ের বিষয়টি খোঁজ নেবেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর