দশমিনার তেঁতুলিয়া-বুড়াগৌরঙ্গ নদীতে মা ইলিশ নিধন করে চলছে অসাধু জেলেরা। মা ইলিশ নিধনের রেকর্ড বিগত কয়েক বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। রাতের আঁধারে তেঁতুলিয়া নদীর তীরে ও গ্রামে গ্রামে মা ইলিশের হাট বসে। মৎস্য ও নৌ পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশে মা ইলিশ নিধন করছে জেলেরা এমন অভিযোগ নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের। মৎস্য বিভাগ ও নৌ-পুলিশ মা ইলিশ রক্ষায় ধীরগতির ট্রলার দিয়ে অভিযান পরিচালনা করার কারণে জেলেরা মা ইলিশ নিধন করে অনায়াসে পালিয়ে যায়। স্থানীয় মা ইলিশ নিধনে বিরত থাকা জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, মৎস্য দপ্তর ও নৌ-পুলিশ ইচ্ছে করেই ধীরগতির ট্রলার দিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম জানান, নৌ-পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেই জেলেরা নিষিদ্ধ সময়ে নদীতে মাছ শিকার করছেন এমন অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। দশমিনার হারুন নামে এক জেলে জানান, নৌ-পুলিশকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে ইলিশ ধরার অনুমতি নিয়ে একদিনেই ৭২ হাজার টাকা বিক্রি করেছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জেলে জানান, কর্তৃপক্ষকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে নদীতে জাল ফেলার অনুমতি নিয়েছি। মা ইলিশ নিধন, ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে দশমিনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠলেও মা ইলিশ নিধন বন্ধ করতে পারেনি নৌ-পুলিশ ও মৎস্য বিভাগ। বর্তমানে বিভিন্ন পয়েন্টে প্রকাশ্যে মা ইলিশ বেচাকেনার বিষয়টি এখন উপজেলায় আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। নদীর তীরের বাসিন্দারা জানান, উপজেলার বাঁশবাড়িয়া লঞ্চঘাট, ঢনঢনিয়া বাজার, কেজিরহাট, গোলখালি, আউলিয়াপুর ও পাতার চরে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মা ইলিশ বেচাকেনা। সন্ধ্যা হলেই রাত্রিকালীন এসব হাটে দেখা যায় ক্রেতা ও উৎসুক জনতার ভিড়। হালি প্রতি ১৬শ’ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এ
বিষয়ে দশমিনা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহাবুব আলম তালুকদার জানান, মা ইলিশ রক্ষায় প্রতিদিন নদীতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। টাকা নিয়ে জাল ফেলার অনুমতির বিষয় সম্পূর্ণ মিথ্যা, মা ইলিশ নিধন করতে না পারায় অসাধু জেলেরা মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। দশমিনা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আনিছুর রহমান বলেন, অভিযানের বাজেট ও উপকরণের স্বল্পতার কারণে অভিযান পরিচালনা করতে কিছুটা অসুবিধা হলেও প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
টাকা নিয়ে নদীতে জাল ফেলার অনুমতি দেয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে জানান তিনি।