গোলাপগঞ্জে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া উপহারের ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করায় উদ্বোধনের ১২ দিনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তাছাড়া ঘরগুলোতে বিদ্যুতের তার টানানো হলেও মিটার লাগানো হয়নি। জানা যায়, গত ৯ই অক্টোবর উপকারভোগীদের হাতে সিলেটের গোলাপগঞ্জের হাজীপুর নোয়াপাড়া গ্রামে সরকারি খাস জমিতে অসহায়দের জন্য নির্মিত ১৬টি ঘরের চাবি আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেয়া হয়। উদ্বোধনের ১২ দিন পরও স্বপ্নের ঠিকানায় আসা হয়নি অসহায় ১৬ পরিবারের। তাদের অভিযোগ ঘরগুলোর নম্বর পড়েনি, পোঁতা হয়নি বাথরুমের রিং। এরইমধ্যে ২-৩টি ঘরের দেয়াল ও খুঁটিতে ফাটল ধরেছে। একটি ঘরের দুটি খুঁটি যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে।
নম্বরবিহীন একটি ঘরের জানালা ভেঙে পড়ে আছে ঘরের ভেতরে। এসব অসুবিধা থাকায় এখনো ঘরে উঠতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী দেয়া ঘরের উপকারভোগীরা। এদিকে প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক কাঁচা থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই এলাকার হাজারো মানুষের। এরমধ্যে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ১৬ ঘরের উপকারভোগীদের। স্থানীয় ও উপকারভোগীদের দাবি এ সড়কটি পাকা করে দেয়ার। এ সড়কটি পাকা হলে যাতায়াতকারীদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘব হবে। সরজমিন অসহায়দের স্বপ্নের ঠিকানায় গেলে দেখা যায়, ১৬ পরিবারের মধ্যে একটি পরিবারও উঠেননি স্বপ্নের ঠিকানায়। সরাসরি কাউকে না পাওয়া গেলেও ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে কথা হয় উপকারভোগী আলম আহমদের সঙ্গে। আলম আহমদ জানান, সামনের মাসে ছেলে-মেয়ের পরীক্ষা শুরু হবে। এসব ঘরে ‘বিদ্যুৎ নেই, চারপাশ অন্ধকার। অন্ধকারে তাদের পড়ালেখার অসুবিধা হবে। তাছাড়া বাথরুমে রিংও পোঁতা হয়নি। এজন্য এখনো আসা হয়নি। এখানে বহু আগ থেকে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দা হাজেরা বেগম জানান, আমাদেরকে ৩টি ঘর দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো উঠিনি। কেন ওঠেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ নেই। এখনো বাথরুমের রিং পোঁতা হয়নি। আমার একটি ঘরের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। যেকোনো সময় দেয়াল ভেঙে বড় কোনো বিপদ ঘটতে পারে’। এদিকে যে ২-৩টি ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে তারা উপস্থিত না থাকার কারণে কথা বলা সম্ভব হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গত দুই মাস ধরে অসুস্থ আছেন বলে জানান। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম কবির বলেন, ‘বিদ্যুতের মিটারের বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই বিদ্যুৎ সংযোগ হয়ে যাবে। ফেটে যাওয়া ঘর মেরামত করা হবে।’