দেশে বেসরকারি টেলিভিশনগুলো আসা শুরু হলো। তখন আমাদের এলাকার এক নেতা শুরু করলেন ক্যাবল কানেকশনের ব্যবসা। ক’দিনের মধ্যেই রমরমা অবস্থা। ছাদপেটা বাড়িও করলেন ক’বছরের মাঝে। আমরাও বেশ সালাম দিতাম, নেতা বলে কথা। দেখা হলেই চকলেট, ঝালমুড়ি খাওয়াতেন।
অন্যান্য এলাকায় বিলের থেকে তিনি ৫০ টাকা বেশি রাখতেন। প্রতিবাদ করবার কেউ ছিল না। আর অন্য লাইন তিনি ঢুকতেও দিতেন না এলাকায়।
সহ্য হলো না প্রতিপক্ষের।
হামলায় হাত হারালেন। প্রাণ যায় যায় অবস্থা। দুঃখজনক ঘটনা হলেও কেউ এগিয়ে এলেন না। কারণটা কি আর না বলি। পাকা দালানের পাশাপাশি পৈত্রিক সম্পত্তি জমিটাও বিক্রি করতে হয়েছে তাকে হাসপাতাল ও আদালত পাড়ায় হাঁটতে হাঁটতে।
ক্ষমতা শেষ। আমরা সালামতো দুরের কথা কথাই বলতাম না। কারণ পকেটে চকলেট খাওয়ানোর আর টাকা নাই। নাই ক্ষমতা।
আরেকজনের কথা বলি। সেও এলাকার বিশাল নেতা। রাজত্ব বলা যায়। এক কলেজ পড়–য়া আপুকে উঠিয়ে বিয়ে করেছিলেন। থাকতেন আলিশান বাড়িতে। এক টাকা ভাড়া দিতেন না। এতটাই বাড়লেন যে, হারালেন জীবন। স্বস্তি পেলেন এলাকাবাসী।
এই দুজনকে কাছ থেকে দেখেছি। দেখতাম মানুষের সঙ্গে কি পরিমান অন্যায় করতেন। একসময় নোকিয়া ১১০০ ফোন ছিল আধুনিক ফোন। আজ যেটা পকেটে না রেখে দেখিয়ে বেড়াচ্ছেন কাল সেটা হবে সাধারণ, এটাই নিয়ম।
ভালো দাম পেলে এরা বাপকেও দেবে বেঁচে! নচিকেতার একটা গানের লাইন। কিছুদিন আগে খবরে দেখলাম প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বাবা খুন করে আদরের মেয়েকে। ভারতীয় বাংলা ‘ওয়ান’ মুভিটা বেশ জনপ্রিয়। এতে বুম্বাদা নিজের বাবাকে বিসর্জন দিতে চেয়েছিলেন ক্ষমতা ধরে রাখতে। মুভি হলেও তার ক্ষমতার দাপট রুদ্ধ হয়েছে।
যাই হোক ইতিবাচক খবর খুঁজছিলাম। পেলাম অনেক। তার মধ্যে একটা নওগাঁয় এক ভিক্ষুক মাইলের পর মাইল গাছ লাগিয়ে গেছেন। কোন প্রকার স্বার্থের ধার ধারেননি তিনি। এই মানুষটা বেঁচে থাকবেন আমাদের। তার নাম মুছে যাবে হয়ত ঘুছবে না কর্ম, সম্মান।