বড়সড় পাইপ বিভ্রাট। আর তার জেরেই একটি জাপানি হাসপাতালের রোগী থেকে চিকিৎসকেরা অজান্তেই প্রায় ৩০ বছর ধরে পানযোগ্য পানির বদলে টয়লেটের পানি পান করলেন। গত মাসে জাপানের সুইতার ওসাকা ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চমকপ্রদ এই ভুলটি ধরা পড়ে। সেখানেই বছরের পর বছর ধরে ভুল করে ঘটেছে এই ঘটনা। গত ২০ অক্টোবর বিষয়টি নজরে আসে কর্তৃপক্ষের। জানা যায় টয়লেটের পাইপের সাথে পানীয় জলের পাইপ কোনোকারণে সংযুক্ত হয়ে গেছিলো। স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম ইয়োমিউরি শিম্বুন এ খবর জানিয়েছে।
আরও তদন্তের পর প্রায় ১২০ টি ট্যাপকে ত্রুটিপূর্ণ বলে ঘোষণা করা হয়েছে এবং সেই সঙ্গে জানা গেছে ১৯৯৩ সালে হাসপাতালটি খোলার সময় থেকে প্রায় ৩০ বছর ধরেই সমস্যাটি চলে আসছে।
হাসপাতালের কর্মীরা এবং রোগীরা পানীয় জলের উৎস না জেনেই এতদিন পানি পান করা থেকে শুরু করে হাত ধোয়া এবং গার্গল করা এসবকিছুই টয়লেটের পানি দিয়ে করে আসছিলেন। চিকিৎসক, নার্স এবং ওই বিভাগে কর্মরত অন্য কর্মীদেরও এই পানি পান করতে হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কল-বিভ্রাট নজরে এসেছে হাসপাতালে নতুন পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট তৈরির সময়। তা বানাতে গিয়ে কলের পাইপের উৎস জানা যায়। তার পর সামনে এসেছে গোটা বিষয়। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই পাইপগুলি বদলানোও হয়েছে। ওসাকা ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, তারা বিষয়টি তদন্ত করছে, সেই সঙ্গে পানির গুণমান পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
বাথরুমে ব্যবহারের অপরিশোধিত পানি পান করে তাঁদের শরীরে কোনও প্রভাব পড়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে যে, তারা গোটা হাসপাতালের পাইপলাইন পরীক্ষা করবে এবং ত্রুটি সংশোধন করবে। হাসপাতালটি সপ্তাহে অন্তত একবার পানির রঙ, গন্ধ এবং স্বাদ পরীক্ষা করে এবং ২০১৪ সালে রেকর্ড নেওয়ার পর থেকে কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি বলে দাবি করা হয়েছে। একটি সংবাদ সম্মেলনে, ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজুহিকো নাকাতানি ক্ষমাপ্রার্থনা করে বলেছেন: 'আমি অত্যন্ত দুঃখিত যে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী এই হাসপাতাল জনমানসের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।' তিনি এও জানিয়েছেন এতো বড় বিভ্রাটের পর হাসপাতাল নিয়মিত তাদের পানির পাইপের সংযোগ পরীক্ষা করবে।
সূত্র: dailymail.co.uk