আবার ইউরোপ করোনা ভাইরাসের এপিসেন্টার। দেশে দেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এর আগের মহামারিতে প্রতিবেশি অন্য দেশগুলোর চেয়ে অনেক ভাল পারফরমেন্স করেছে জার্মানি। কিন্তু এখন নতুন করে ইউরোপে এই সংক্রমণের কেন্দ্রে চলে এসেছে দেশটি। সেখানে করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ ঢেউ রেকর্ড গড়েছে। সরকারি স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট বলে পরিচিত রবার্ট কোচ ইনস্টিটিউট (আরকেআই) থেকে সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্যমতে, বুধবার পর্যন্ত জার্মানিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে এক লাখ ১১৯।
২৪ ঘন্টায় সেখানে মারা গেছেন কমপক্ষে ৩৫১ জন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান ও বার্তা সংস্থা এএফপি।
নতুন করে করোনার এই ঢেউয়ের ফলে ইউরোপের সর্ববৃহৎ এই অর্থনীতির দেশ প্রচণ্ড হোঁচট খেয়েছে। সেখানে সংক্রমণও নতুন রেকর্ড গড়েছে। হাসপাতালের আইসিইউ বেডগুলো রোগীতে পূর্ণ। অ্যাঙ্গেলা মারকেলের মন্ত্রীপরিষদের কাছ থেকে নতুন জোট সরকার ক্ষমতা হাতে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সঙ্কটের মুখোমুখি পড়ছে। এরই মধ্যে অনেক হাসপাতাল তার ধারণ ক্ষমতা অতিক্রম করেছে।
ফলে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের বাধ্য হয়ে বিদেশে পাঠানোর প্রয়োজন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জার্মান ইন্টারডিসিপ্লিনারি এসোসিয়েশন ফর ইনটেনসিভ কেয়ার অ্যান্ড ইমার্জেন্সি মেডিসিনের প্রধান গারনট মার্ক্স। গত সপ্তাহে দেশটি করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কঠোরতা আরোপ করেছে। এর মধ্যে জনগণকে প্রমাণ দেখাতে হবে যে, তারা টিকা নিয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন। সম্প্রতি পরীক্ষায় তারা করোনা নেগেটিভ হয়েছেন। তারপরই গণপরিবহনে আরোহন বা কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পারবেন। সবচেয়ে খারাপভাবে আক্রান্ত করেছে এমন অনেক এলাকায় নতুন করে শাটডাউন দেয়া হয়েছে। ক্ষমতায় আসন্ন নতুন চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ বাধ্যতামূলক টিকা নেয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন করোনা মহামারিকালে যেসব স্বাস্থ্যকর্মী ফ্রন্টলাইনে থেকে সেবা দিচ্ছেন তাদেরকে ১০০ কোটি ইউরো বোনাস দেবেন।
ওদিকে বৃটেনে করোনা ভাইরাসের চতুর্থ টিকা নোভাভ্যাক্স অনুমোদন পেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে প্রোটিনভিত্তিক এই টিকায় খুব কমই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। এরই মধ্যে এর ৬ কোটি ডোজ অর্ডার দিয়েছে বৃটিশ সরকার। প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ২৩ ভাগ। এর মধ্যে বেশি আক্রান্ত উত্তর আমেরিকায়।
ওদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে ইতালি নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অধীনে অসংখ্য স্থানে টিকা না নেয়া ব্যক্তিদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। টিকা নেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রাপ্ত বয়স্ক সবাইকে দেয়া হচ্ছে বুস্টার ডোজ। জানুয়ারির শেষ নাগাদ মোট জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশকে বুস্টার ডোজ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পর্তুগালের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। দেশজুড়ে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন বিধিনিষেধ দিতে যাচ্ছে ফ্রান্স।