পাকিস্তানে তুচ্ছ কারণেই ৪ জনের বিরুদ্ধে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ দায়েরের ঘটনা ঘটেছে। এরইমধ্যে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্তরা স্থানীয় এক মসজিদের ইমামের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়লে তাদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। আল-জাজিরার খবরে জানানো হয়, ওই এলাকায় এক খ্রিস্টান ব্যাক্তি মারা গেলে ওই ৪ জন মসজিদের ইমামকে অনুরোধ করেন বিষয়টি মাইকে ঘোষণা করতে। কিন্তু খ্রিস্টান ব্যাক্তির মৃত্যুর খবর মাইকে প্রচার করতে অস্বীকৃতি জানান ইমাম। এ নিয়ে ইমামের সঙ্গে তর্ক হয় তাদের। এরই জেরে তাদের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরের কাছেই ‘খোদি খুশাল সিং’ নামের এক গ্রামে। ফারিয়াদ নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত ১৮ নভেম্বর এই ব্লাসফেমি আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়।
এখনো অভিযুক্তরা আটক রয়েছেন বলে জানান তিনি। পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ৪ জনই মুসলিম। ওই এলাকায় এক খ্রিস্টান ব্যাক্তির মৃত্যু হলে সেটি মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা করার অনুরোধ জানান তারা। কিন্তু মসজিদ থেকে খ্রিস্টান ব্যাক্তির মৃত্যুর খবর প্রচারে রাজি না হলে ইমামকে তারা তাকে অভিশাপ দিতে থাকেন।
পাকিস্তানে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ অত্যন্ত স্পর্শকাতর। দেশটিতে এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। পাকিস্তান এখন পর্যন্ত ব্লাসফেমির অভিযোগে কাউকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেনি। তবে দেশটিতে কট্টোর ধর্মীয় মতাদর্শ জনপ্রিয় হওয়ায় প্রায়ই ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হতে দেখা যায়। আল-জাজিরার রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ১৯৯০ সালের পর থেকেই এমন অন্তত ৭৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে দেশটিতে।
এদিকে ওই ৪ ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে এর নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের মানবাধিকার কর্মীরা। এমন একজন আইনজীবী নাদিম বলেন, কোনো মুসলিম যদি একজন খ্রিস্টানের মৃত্যুর খবর মসজিদ থেকে প্রচার করতে চান তাহলে এটি একটি দারুণ কাজ। এটি কোনোভাবেই কোনো ধর্মের উপরে আঘাত নয়।