× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিনা মাশুলে ডাক বন্ধ করে দেন রানী এলিজাবেথ

ইতিহাস থেকে

শামীমুল হক
২৬ নভেম্বর ২০২১, শুক্রবার

মুহাম্মদ বিন তুঘলক প্রবর্তিত ডাকচৌকির সম্প্রসারণ করেন মুঘল সম্রাট শেরশাহ্। তিনি ডাক চলাচলের জন্য সোনারগাঁ থেকে সিন্ধু পর্যন্ত ২০০০ মাইল দীর্ঘ রাস্তা তৈরি করেন যা ‘গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড’Ñ নামে পরিচিত। এ রাস্তার পাশে ডাকহরকরাদের বিশ্রামের জন্য দু’-মাইল পর পর ডাক বাংলো স্থাপন করেন। মহীশুরের রাজা চিকদেব ১৬৭২ সালে ব্যক্তিগতভাবে ডাক চলাচল ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। ১৮ শতকের দ্বিতীয় দশকে মুঘল সম্রাটের ক্ষমতা যখন খর্ব করা হয় তখন স্থানীয় জমিদার, ব্যবসায়ী শ্রেণি তাদের সরকারি ও ব্যক্তিগত চিঠিপত্র আদান-প্রদানের জন্য ডাকহরকরা নিয়োগ করতেন, যারা পায়ে হেঁটে ডাক বহন করতো। ভারতীয় উপমহাদেশের ডাকব্যবস্থা পশ্চিমের ডাকব্যবস্থার তুলনায় কোনো অংশে কম ছিল না। সর্বপ্রথম ১৬৩৫ সালে ইংল্যান্ডে ডাক সার্ভিসকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বিশ্বে আধুনিক যে ডাকব্যবস্থার জন্য সবচেয়ে বেশি অবদান ইংরেজদের।
১১৯৯ খ্রিষ্টাব্দে রাজা প্রথম জন-এর সময় শহর ও হাইওয়ের পাশে ডাকঘর স্থাপন করা হয়। ১৬৪৯ সালে সপ্তাহে একবার ডাক বিলি করা হতো। ১৫৯১ সালে রানী এলিজাবেথ বিনামাশুলে ডাকে পত্র পাঠানোর সুযোগ বন্ধ করে দেন। এরপর পেনি পোস্ট প্রবর্তন করে ডাকটিকিটের মাধ্যমে দূরত্ব অনুযায়ী মাশুল নির্ধারণ করা হয়। এজন্য বৃটেনের পোস্টাল ডিপার্টমেন্ট প্রথম রানীর মুকুটসহ মাথা দিয়ে ১ পেনির স্ট্যাম্প ছাপে। তবে ছাপতে গিয়ে কালো হয়ে যাওয়ায় এর নাম দেয়া হয় পেনি ব্ল্যাক। ১৬৫৬ সালে বৃটিশ পার্লামেন্টে ডাকঘর বিধি পাস হয়। চিঠি ঠিকমতো বিলি হচ্ছে কিনা এজন্য ১৬৬১ সালে পোস্টমার্ক-এর প্রবর্তন শুরু হয়। লন্ডন শহরে প্রথম গোলাকার মোহর ব্যবহার শুরু হয়। পরে এটি সারা বৃটেনে চালু হয়। এ মোহরে তারিখ থাকার ফলে জনগণ জানতে পারতো চিঠিটি পোস্ট করার কতোদিন পর বিলি করা হয়েছে। রেলের মাধ্যমে ডাক বহন শুরু হয় ১৮৫৪ সালে। এবং রেলওয়ে মেইল সার্ভিস চালু হয় ১৮৬৪ সালে। ১৮৫৪ সালে প্রথমবারের মতো পোস্ট স্ট্যাম্প চালু করা হয় । এ সময় অর্ধ আনা মূল্যের লালচে কমলা রঙের এবং এক আনা মূল্যের উজ্জ্বল নীল রঙের স্ট্যাম্প চালু হয়। ওদিকে আন্তর্জাতিক ডাক বিনিময়ের বিভিন্ন অসুবিধা দূর করার জন্য ১৮৭২ সালে জার্মানির উদ্যোগে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন ডাকা হয়। ১৮৭৪ সালে বার্নে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ১৫টি দেশের সমন্বয়ে স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমে বিশ্ব ডাক সংস্থার জন্ম হয়। ১লা জুলাই ১৮৭৬ সালে বৃটিশ-ভারত বিশ্ব ডাক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে। এর আগে ১৮৫৪ সালে বৃটিশ ভারতে আধআনা ডাক মাশুলের বিনিময়ে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ডাক সার্ভিস করতে আইন প্রণয়ন করা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম ডাকটিকিট চালু হয় ১৮৫৪ সালের ১লা অক্টোবর। সাধারণ মানুষ ভারতের যে কোনো অংশে এক পয়সা মূল্যের পোস্টকার্ড এবং আধআনা মূল্যের খামে চিঠি পাঠাতে পারতো। ১৯৪৭ সাল থেকে পূর্ব বাংলার জনসাধারণ পাকিস্তানের চালু করা ডাকটিকিট ব্যবহার শুরু করে। সে সময় প্রচলিত ডাকটিকিটের ওপর ভারত শব্দের স্থলে পাকিস্তান ছাপ দেয়া হয়েছিল। পাকিস্তান নিজস্ব ডাকটিকিট প্রথম চালু করে ১৯৪৮ সালের ৯ই জুলাই।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর