× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

যোগাযোগ খাতের তিন প্রকল্প কোন পর্যায়ে?

দেশ বিদেশ

নূরে আলম জিকু
২৭ নভেম্বর ২০২১, শনিবার

আসছে নতুন বছরে একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সরকার। বিশেষ অগ্রাধিকারে সাতটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলছে পুরোদমে। যোগাযোগ ও পরিবহন খাতের তিনটি প্রকল্প চালু হবে ২০২২ সালে। পদ্মা বহুমুখী সেতু, পায়রা বন্দর এবং মেট্রোরেল পরিষেবা প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ দিকে। কর্ণফুলী টানেল অগ্রাধিকারের তালিকায় না থাকলেও চলাচলের জন্য তা খুলে দেয়া হবে ২০২২ এ। ফলে আগামী বছরে এক এক করে দৃশ্যমান হবে সরকারের উন্নয়ন। এদিকে আগামী বছরের ৩০শে জুনের আগেই চালু হবে পদ্মা সেতু। এর মাধ্যমে যোগাযোগে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
দেশের বৃহত্তম এই সেতুটি চালু হলে সারা দেশ সড়ক যোগাযোগের আওতায় চলে আসবে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে মেট্রোরেলের কাজ। এরই মধ্যে রাজধানীর উত্তরা ডিয়াবাড়ির এলাকার ডিপো থেকে মিরপুর অংশে প্রথম মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক চলাচল দেখা গেছে। বাকি অংশের কাজ প্রায় শেষের দিকে। আগামী বছরের ১৬ই ডিসেম্বর মেট্রোরেলে যাত্রী নিয়ে চলাচলের কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ।
বিশেষ অগ্রাধিকারে প্রকল্পগুলোর কাজের অগ্রগতির প্রতিবেদন বলছে, পদ্মা বহুমুখী সেতু, মেট্রোরেল ও পায়রা বন্দরের কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের আগেই প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ করতে চাচ্ছে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু, পায়রা বন্দর এবং মেট্রোরেল (এমআরটি-৬) এ প্রকল্প তিনটির কাজ প্রায় শেষ দিকে। এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পদ্মারেল সংযোগ এবং ঢাকা-কক্সবাজার-দোহাজারী রেললাইনের কাজ এগিয়ে চলছে। তবে মেট্রোরেল,পদ্মা সেতু ও পায়রা বন্দর প্রকল্পকে বেশি প্রধান্য দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, গত ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৮৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৮৬ দশমিক ১৩ শতাংশ। আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, জুনের আগেই পুরো সেতুর কাজ শেষ হবে। এরই মধ্যে গত ১০ই নভেম্বর পদ্মা সেতুতে পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। সেতুর ৪০ নম্বর পিলার থেকে ঢালাই শুরু হয়। ঢালাইয়ের কাজ শুরু কালে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, প্রায় ৩০০ মিটার পিচ ঢালাই করা হবে। নিয়মিতভাবে ঢালাই করলে সম্পন্ন হতে প্রায় চার মাস লাগবে। বর্তমানে আড়াই ইঞ্চি পুরু ঢালাই করা হচ্ছে। পরে এর ওপর আরও দেড় ইঞ্চি ঢালাই করা হবে। সেতুতে পিচ ঢালাই কাজের পাশাপাশি ডিসেম্বর মাস থেকে সড়কবাতির বসানোর কাজ শুরু হবে। পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯ জেলার মানুষ সরাসরি ঢাকার সঙ্গে যুক্ত হবে। পদ্মা সেতুর নদী অংশ ফেরিতে পারাপার হতে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা লাগলেও সেতু চালু হলে এই পথ ১ ঘণ্টারও কম সময়ে পাড়ি দিতে পারবে। এর আগে গত মাসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে । আইএমইডি প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পের কাজে উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের অগ্রগতি হয়েছে ৮৯ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে অগ্রগতি হয়েছে ৭০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ আগামী বছরের ডিসেম্বরে মেট্রোরেল চালু করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প এমআরটি-৬ এর জন্য ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে। ২০১৬ সালে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। আগামী বছরে ডিসেম্বর মাসে মেট্রোরেল চালু হলে রাজধানীতে যানজট কমে আসবে বলে মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে প্রথম পানির নিচে এক্সপ্রেসওয়ে কর্ণফুলী টানেলের কাজ প্রায় শেষের দিকে। আগামী বছরে এটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এরই মধ্যে কর্ণফুলী টানেলের কাজের অগ্রগতি ৭৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এই টানেলটিতে দুটি টিউব রয়েছে। ইতিমধ্যে একটি টিউবের কাজ শেষ হয়েছে। অন্যটিরও কাজ চলমান। আগামী বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ হবে। এটি উমুক্ত হলে চট্টগ্রাম শহরে যানবাহনের চাপ কমে যাবে। ২০১৯ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হলেও ৯ দশমিক ৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই টানেলের কাজ পুরোদমে চলছে। এছাড়া গত ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত পায়রা সমুদ্র বন্দরের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৮৩ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৭০ দমশিক ৫২ শতাংশ। আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে। প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা। প্রকল্পের মনিটরিং বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী আইএমইডি প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন এবং অগ্রগতি পরিদর্শন করেছে। এই সময়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৪০ দমমিক ৪৩ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৩৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ।  এদিকে পদ্মা সেতু সঙ্গে পদ্মা রেল সংযোগ চালু হওয়ার কথা থাকলেও রেল সংযোগের তেমন একটা অগ্রগতি হয়নি। এতে একই সময়ে পদ্মা রেল সংযোগ চালু হচ্ছে না বলে মনে করছেন অনেকে। আইএমইডির প্রতিবেদনে দেখা যায়, অক্টোবরে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে  ৫০ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৪৬ শতাংশ। অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকা-কক্সবাজার-দোহাজারী রেললাইন প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৬৪ শতাংশ। মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৫১ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং ভৌত অগ্রগতি ৬০ দশমিক ৮ শতাংশ।
এছাড়া রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ চলছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বিআরটি চালু হওয়ার কথা রয়েছে। সমপ্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বিআরটি প্রকল্পটি পরিদর্শন করেছেন। সে সময়ে তিনি বলেন, কাজের ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২২ সালে চালু হবে এই প্রকল্পটি। এতে গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যানজট থাকবে না। এই রুটে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। এজন্য রাখা হয়েছে পৃথক পৃথক লেন। তবে প্রকল্পটি দেরিতে শুরু হওয়া ও নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সময় অতিবাহিত হওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর