সিদ্ধিরগঞ্জে বহুতল ভবনের চারতলায় এক ফ্ল্যাটে আগুনে দগ্ধ হয়ে মামুন (২৪) নামে এক শ্রমিক মারা গেছেন। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার মৃত্যু হয়।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন জানান, মামুনের শরীরের ৯৯ শতাংশই পুড়ে গেছে। তার অবস্থা খুবই শঙ্কটাপন্ন ছিল। এ ছাড়াও এই ঘটনায় ৯৯ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে পারভেজ (২৮) আইসিইউতে ও ৩০ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে জীবন (২০) এইচডিইউতে ভর্তি রয়েছেন। মামুনের ফুপাতো ভাই মো. সোহেল জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে এ ঘটনা ঘটে। এতে তারা ৩ জন দগ্ধ হন। দগ্ধদের সহকর্মী মো. রিয়াদ জানান, দগ্ধরা সবাই সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজী এলাকার আদনান টাওয়ারে মেস ভাড়া করে থাকতেন।
তিনজনই ইপিজেডের অনন্ত অ্যাপারেল গার্মেন্টে কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাজ শেষে তিনজন বাসায় আসেন। দরজা খুলে ইলেক্ট্রিক সুইচ চালু করতেই বিকট শব্দে ঘরের মধ্যে আগুন জ্বলে ওঠে। এতে তারা তিনজন দগ্ধ হন। পরে তাদের উদ্ধার করে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়। ওই ভবনের দোতলার বাসিন্দা মো. হামিম বলেন, ‘বিস্ফোরণে ভবনটি কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের পর দেখি ধোঁয়ায় অন্ধকার। ওই ফ্ল্যাটের দরজা ভাঙা, ভেতরে আগুন জ্বলছে। আগুনের ভয়ে দ্রুত নিচে নেমে দেখি, দগ্ধ দু’জন পুকুরে পানিতে লাফিয়ে পড়েছেন। আগুনে পোড়ার যন্ত্রণায় তারা চিৎকার করছেন।’ প্রত্যক্ষদর্শী দোকানদার মো. তুহিন বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই বিস্ফোরণের পর আগুনে দগ্ধ তিনজনই নিচে নেমে আসেন। তাদের সবার শরীর পোড়া। আগুনে দুই ব্যক্তি যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে পুকুরের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অন্যজন মাটিতে গড়াগড়ি করছিলেন। পরে তাদের স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় গাড়িতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভান। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান জানান, সন্ধ্যার দিকে ওই বাসায় বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে। এতে তিন গার্মেন্টকর্মী দগ্ধ হন। তাদের একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।