× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এখনো টিকা পেতে বিলম্ব কেন?

শেষের পাতা

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
২৭ নভেম্বর ২০২১, শনিবার

করোনার টিকা পেতে মানুষ নিবন্ধন করে মাসের পর মাস অপেক্ষা করছেন। নিবন্ধনের তিন/চার মাস পরে টিকার এসএমএস আসারও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে অহরহ। টিকার এসএমএস আসতে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হচ্ছে টিকাপ্রত্যাশীকে। এ জন্য অনেকে আবার দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে দ্রুত টিকা নেয়ার পথ বেছে নিয়েছেন। নানা উদ্যোগে বিশেষ কোভিড টিকাদান ক্যাম্পেইনও পরিচালিত হচ্ছে। বস্তিবাসীকেও টিকা দেয়ার বিশেষ কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। দেয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের টিকাও। কিন্তু তাতে টিকা দেয়ার গতি তেমন বাড়ছে না।
গতিতে শ্লথই রয়ে যাচ্ছে। অথচ সরকার বলছে তাদের হাতে যথেষ্ট টিকা আছে। টিকার কোনো ঘাটতি নেই।
এদিকে দেশে করোনা প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত সোয়া ৯ কোটির বেশি ডোজ টিকা বিতরণ করা হয়েছে। দেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৪ শতাংশ প্রথম ডোজ নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা ২১ শতাংশের বেশি। বিভিন্ন হিসাব করে দেখা যায়, বর্তমানে নিবন্ধনকারীদের এখনই ৪ কোটি ৪১ লাখ টিকা দরকার। সরকার আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে দেশের আট কোটি মানুষকে করোনার দুই ডোজ টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করছে। এতে ৫০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় আসবে বলে সরকার মনে করছে। বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ লাখ ডোজ টিকা দেয়া হলেও দৈনিক টিকা দেয়ার পরিমাণও বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে।
অন্যদিকে অনলাইনে নিবন্ধনকারীদের ১ কোটি ১৩ লাখ লোক এখনো পর্যন্ত এক ফোঁটা ভ্যাকসিনও পাননি।  এখন পর্যন্ত দেশে মোট জনসংখ্যার ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা ২১ দশমিক ১০ শতাংশ (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস’র সর্বশেষ তথ্যমতে দেশে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯১ লাখ ১০ হাজার)।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২৪শে নভেম্বর পর্যন্ত দেশে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৫ কোটি ৭১ লাখ ২৪ হাজার ৮৯৯ জন। অন্যদিকে উল্লিখিত সময় পর্যন্ত মোট দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৩ কোটি ৫৬ লাখ ৯০ হাজার ২৫৮ জন। এখন পর্যন্ত দেশে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে বিভিন্ন টিকা দেয়া হয়েছে ৯ কোটি ২৮ লাখ ১৫ হাজার ১৫৭ ডোজ। এই মুহূর্তে দ্বিতীয় ডোজ টিকার দরকার ২ কোটি ১৪ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪১ জনের। আর নিবন্ধনকারীদের মধ্যে এক ডোজও টিকা পাননি এমন সংখ্যা ১ কোটি ১৩ লাখ ৭৯ হাজার ৩০১ জন। অর্থাৎ এদের প্রত্যেকের ২ ডোজ করে ২ কোটি ২৭ লাখ ৫৮ হাজার ৬০২ ডোজ টিকা লাগবে। বর্তমানে নিববন্ধনকারীদেরই সবমিলিয়ে টিকা দরকার ৪ কোটি ৪১ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৩ ডোজ। কিন্তু তিন সপ্তাহ আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, টিকা হাতে মজুত আছে ১ কোটি ডোজের বেশি। এরপর দেশে এই মাসে আরও টিকা আসার খবর পাওয়া যায়নি। ২৪শে নভেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৬ কোটি ৮৫ লাখ ৪ হাজার ২০০ জন।
গত ১০ই অক্টোবর রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক টিকা কর্মসূচির বিস্তার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে  জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে দেশের আট কোটি মানুষকে করোনার দুই ডোজ টিকা দেয়া সম্ভব হবে। এতে ৫০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় আসবে। মার্চ থেকে এপ্রিলের মধ্যে আরও চার কোটি ডাবল ডোজ টিকা দিতে সক্ষম হবো। মোট ১২ কোটি লোককে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যাবে আগামী এপ্রিলের মধ্যে, এতে ৭০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় আসবে। তিনি আরও জানান, অক্টোবরে তিন কোটি, নভেম্বরে পৌনে চার কোটি, ডিসেম্বরে পাঁচ কোটি ও জানুয়ারিতে পৌনে চার কোটি ডোজ টিকা আসবে। দেশে একদিনে ৮০ লাখের বেশি টিকা দিয়েছি। যদি প্রয়োজন হয় এর থেকেও বড় ক্যাম্পেইনের চিন্তা রয়েছে। প্রতি মাসে কর্মসূচি নেয়ার কথা ভাবছি। দৈনিক টিকা দেয়ার পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। এতে দৈনিক ১০ থেকে ১৫ লাখ টিকা দেয়ার কথা বললেন। ৭ই নভেম্বর গাজীপুরের কাশিমপুরে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, দেশে ভ্যাকসিনের কোনো ঘাটতি নেই। হাতে এক কোটির উপরে ভ্যাকসিন আছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সব মানুষকেই ভ্যাকসিন দেয়া হবে। সে জন্যই আমরা ২১ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনে রেখেছি। সেখান থেকে এ মাসে অন্তত তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আসবে। আগামী মাসেও একই হারে আসবার কথা রয়েছে। আগামী বছর জানুয়ারি মাসের মধ্যেই অন্তত ১২ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনার টিকাদান উদ্বোধন হয় চলতি বছরের ২৭শে জানুয়ারি আর গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর