× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অপেক্ষা ফুরালো রাব্বির

খেলা

স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২৭ নভেম্বর ২০২১, শনিবার

‘না, কোনো আক্ষেপ নেই। অপেক্ষায় আছি, একদিন তো অভিষেক হবে’- হাসিমুখে ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বির এই জবাব অনেকবারই শোনা গেছে। কিন্তু দিন যায় মাস যায় রাব্বির সেই অপেক্ষার প্রহর ফুরায় না। টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডে এমনকি টেস্ট সব স্কোয়াডে জায়গা পেলেও অভিষেক হয় না একাদশে।  ২০১৯ এর এপ্রিলে প্রথম জাতীয় দলের স্কোয়াডে ডাক এলো। এরপর ৯৫৫ দিন কেটে গেলেও রাব্বির খেলার সুযোগ হয় না। কেন এমন পরিস্থিতি তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা নির্বাচক আর টিম ম্যানেজম্যান্টের যুক্তি, কতকিছুই না চলছিল গেল প্রায় তিন বছর ধরে। অবশেষে সাদা পোশাকে রঙিন দিন এসেছে চট্টগ্রামের ২৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের। ঘরের মাঠে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তার অভিষেক হয়েছে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে।
যদিও গতকাল তার ব্যাট হাতে মাঠে নামার সুযোগ হয়নি। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল টাইগাররা। কিন্তু সেখান থেকে দলকে টেনে নিয়ে যান লিটন কুমার দাস ও মুশফিকুর রহীম। আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৫৩ রান নিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে রাব্বির এই টেস্ট অভিষেক নিয়েও আছে আলোচনা-সমালোচনা। নির্বাচক ও টিম ম্যানেজম্যান্টের অদূরদর্শীতাও। তাকে মারকুটে ব্যাটসম্যান আর দুর্দান্ত ফিল্ডার হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। তাই ধরেই নেয়া হয়েছিল তার অভিষেক হবে সাদা বলে। কিন্তু সেটি হয়নি। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে তিনি প্রথম ডাক পান জাতীয় দলের স্কোয়াডে। তার পরে বাংলাদেশ দলে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে আরো ছয়জনের। টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছে দশ জনের।  আর এসময় তিনজনের হয়েছে টেস্ট অভিষেক। চট্টগ্রাম টেস্টেও তার অভিষেক ছিল অনিশ্চিত। ম্যাচের আগের দিন রাত ৮টা পর্যন্ত সিদ্ধান্ত ছিল ওপেনিংয়ে অভিষেক হবে তরুণ ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান জয়ের। এনসিএলে দারুণ পারফরম্যান্সের কারণেই তার সম্ভাবনা ছিল বেশি। কিন্তু হঠাৎ করেই বদলে যায় সব। টিম ম্যানেজম্যান্ট আরো একটি সুযোগ দেন তরুণ ওপেনার সাইফ হাসানকে। আর যাকে সাদা বলে অভিষেক করানোর কথা সেই রাব্বিকে সুযোগ দেয়া হয় সাদা পোশাকে। তার সামনে ছুড়ে দেয়া হয় লাল বলের চ্যালেঞ্জ। এখন তার প্রমাণ করার পালা নির্বাচকরা সঠিক কিনা! কারণ, সাইফ হাসানকে টি-টোয়েন্টি অভিষেক করিয়ে বাজেভাবে ব্যর্থ হয়েছে টিম ম্যানেজম্যান্ট। মনোবল হারানো সাইফকে আবার টেস্টে সুযোগ দিয়েও পড়েছেন দারুণ সামালোচনার মুখে। অবশ্য এখন রাব্বির পারফরম্যান্সই দেবে অনেক প্রশ্নের উত্তর।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর গতকাল নিজ শহরে রাব্বির অভিষেক হয়। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ৯৮তম ক্রিকেটার ইয়াসির আলী রাব্বি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর আগে তার হাতে টেস্ট ক্যাপ তুলে দেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। ছয় নম্বরে সাকিবের জায়গায় একজন বাড়তি ব্যাটার নাকি বাড়তি বোলার এই নিয়ে ছিল আলোচনা। কিন্তু দলের  বেহাল ব্যাটিং অবস্থার কারণে কৌশলগত দিক বিবেচনা করে একজন বাড়তি ব্যাটারের দিকেই এগিয়েছে টিম ম্যানেজম্যান্ট।
সামপ্রতিক সময়ে ঘরোয়া এবং বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে জাতীয় দলে উঠে আসতে দেখা গেছে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে। যেমন আফিফ হোসেন, শরিফুল ইসলাম, নাঈম শেখ, নাসুম আহমেদ প্রমুখ। কিন্তু বাংলাদেশের ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পর্কে যারা একটু বেশি ধারণা রাখেন, তারা নিশ্চয়ই রাব্বিকেও চেনেন ।  কারণ, ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলাদেশের যে কয়জন তরুণকে নিয়মিত পারফর্ম করতে দেখা যায়, ইয়াসির আলী তাদেরই একজন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার ৫১.২০ গড়ে করা ৩২৮৯ রানই বলে দিচ্ছে ব্যাটার হিসেবে তিনি কেমন। এই ৫৪ ম্যাচে তার নামের পাশে ৮ সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে ২৪টি ফিফটি। অথচ গত দেড় বছরে টেস্ট দলে তার ভূমিকা হচ্ছে দ্বাদশ ক্রিকেটার হিসেবে, বদলি ফিল্ডার হিসেবে সিলি পয়েন্ট বা ফরওয়ার্ড শর্ট লেগে দায়িত্বপালন করা। অবশ্য সেই দায়িত্বটিও দারুণভাবে পালন করে অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর