চাঁপাই নবাবগঞ্জ পৌর নির্বাচন নিয়ে ভয় ও সংশয়ে ভোটাররা। শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু নির্বাচন নাকি কারচুপি আর জোর-জুলুমের নির্বাচন হবে তা নিয়ে শহরজুড়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে, বাধা দেয়া হচ্ছে প্রচারে। পুলিশের গ্রেপ্তার আতঙ্কে মাঠেই নামতে পারছেন না স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। শেষমেশ ভোটের দিন কি হবে তা নিয়ে ঘোরপাকে জনগণ। পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল রোববার পর্যন্ত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সামিউল হক লিটনের গুরুত্বপূর্ণ ৬ কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মেয়র প্রার্থী লিটনের কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিযান চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। সামিউল হক লিটনের ভাতিজা প্লাবনকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
মামলায় মেয়র প্রার্থী লিটনের ১২ কর্মীর নাম রয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত শহরে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়েছেন নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা। গ্রেপ্তার আতঙ্কে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ ভোটারারও রয়েছেন আতঙ্কে। গত তিনদিনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সামিউল হক লিটনের ৬ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ পরিস্থিতিতে গ্রেপ্তার আতঙ্কে মাঠে নামতে পারছেন না স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আজাইপুরের গোলাপ, হালুয়াবান্ধার হান্নান ও নাদিম, আলীনগর-ভুতপুকুরের বাহার আলী ও ওমর আলী এবং আলিনগরের আমানত।
সামিউল হক লিটন বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় কোনো পরোয়ানা ছাড়াই আমার কর্মী আমানতকে আলিনগরের নির্বাচনী ক্যাম্প থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। এর আগেও আমার ৫ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও আমার ভাতিজাকে প্রধান আসামি করে ১২ কর্মীর নামে মামলা করা হয়ছে। এ কারণে কর্মীদের মধ্যে গ্রেপ্তারভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। প্রচারে বাধা দেয়া হচ্ছে। তারপরও আমি আশাবাদী একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। চাঁপাই নবাবগঞ্জ পৌর শহরের একাধিক বাসিন্দা বলেন, নৌকার কর্মী-সমর্থক এবং চিহ্নিত ভোটাররা ছাড়া আর কাউকে ভোটকেন্দ্রে যেতে দেয়া হবে না বলে ভয়ভীতি ছড়ানো হচ্ছে। এ অবস্থায় সাধারণ ভোটাররা উৎকণ্ঠিত। সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ে চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোজাফফর হোসেন বলেন, আমানত নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে মারামারি ও বিস্ফোরকের পুরনো দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তিনি কোনো প্রার্থীর কর্মী কিনা জানি না। এ দুটি মামলার এজাহারে তিনি অভিযুক্ত ছিলেন না বলে স্বীকার করেন ওসি। ওসি বলেন, ছোটখাটো কিছু ঘটনা ছাড়া শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো অভিযোগ তিনি পাননি। সার্বিক পরিস্থিতি সন্তোষজনক বলে তিনি দাবি করেন। উল্লেখ্য, আগামী ৩০শে নভেম্বর চাঁপাই নবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চারজন মেয়র প্রার্থী। এরা হলেন- আওয়ামী লাগী মনোনীত (নৌকা) মোখলেসুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটন (মোবাইল ফোন), নজরুল ইসলাম (নারিকেল গাছ) ও মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল (জগ)।