× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বৃটেন, জার্মানি, ইতালিতে শনাক্ত

প্রথম পাতা

মানবজমিন ডেস্ক
২৯ নভেম্বর ২০২১, সোমবার

বৃটেন, জার্মানি, ইতালিতে শনাক্ত হয়েছে করোনাভাইরাসের ভয়াবহ ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। নতুন এই ভ্যারিয়েন্টকে কেন্দ্র করে আবার সারা বিশ্বে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দেশে দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বা বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। আবার আটকে যাচ্ছে অর্থনীতির গতিধারা। এরই প্রভাবে একদিনে শুক্রবার তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি কমে গেছে প্রায় ১০ ডলার। আফ্রিকার বহু দেশের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বৃটেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বহু দেশ। পরিস্থিতি আবার গুমোট আকার ধারণ করছে। এরই মধ্যে রোববার মধ্যরাত থেকে সব বিদেশি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসরাইল।
নিজ দেশের নাগরিকরা আফ্রিকার ওইসব দেশ থেকে ফিরলে তাদেরকে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সংক্রমণ বিস্তার রোধে ফোন ট্র্যাকিং প্রযুক্তি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ওমিক্রন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন বিধিনিষেধ দিচ্ছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ওমিক্রন খবরে সারা বিশ্বে হিমশীতল এক আবহ ছড়িয়ে পড়েছে। উদ্বেগে সবাই। এ কারণে শুক্রবার আর্থিক বাজারগুলোতে ধস নামে। বিনিয়োগকারীরা অর্থ বিনিয়োগ থেকে পিছিয়ে যান। প্রায় দুই বছর আগে শুরু হওয়া করোনা মহামারি থেকে বিশ্ব যখন মাথা তুলে দাঁড়াতে চাইছে, তখন ওমিক্রন আতঙ্ক আবার সবাইকে গ্রাস করেছে।
বৃটেনে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে দু’জনের শরীরে। বৃটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেছেন, আক্রান্ত ব্যক্তিরা দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেছিলেন। ফলে ওই সফরের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারে আক্রান্তের ঘটনা। জার্মানির বেভারিয়া রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দু’জন ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্যে ২৪শে নভেম্বরে মিউনিখ বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন ওই দু’ব্যক্তি। বর্তমানে তারা আইসোলেশনে আছেন। এই দু’ব্যক্তি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিলেন বলে জানা  গেছে।
ইতালির ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউট বলেছে, মোজাম্বিক ফেরত এক ব্যক্তির দেহে মিলানে শনাক্ত করা হয়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট। চেক প্রজাতন্ত্রের স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষ বলেছে, নামিবিয়ায় সময় কাটিয়েছেন এমন একজনের শরীরে তারা ওমিক্রন সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে বলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওমিক্রনকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এর অর্থ হলো আগের সব ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে অধিক সংক্রামক এই ভ্যারিয়েন্ট। তবে বিশেষজ্ঞরা এখনো নিশ্চিত নন অন্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে কতোটা বেশি বা কম ক্ষতিকর ওমিক্রন। ইংল্যান্ডের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ক্রিস উইটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ওমিক্রন বিষয়ে তারা এখনো অনিশ্চয়তায়। তবে এই ভ্যারিয়েন্ট প্রচলিত টিকাকে পাশ কাটিয়ে যেতে সক্ষম হবে বলে মনে হচ্ছে। এমনটা মনে করার যৌক্তিক কারণও আছে। এই ভ্যারিয়েন্ট প্রথম শনাক্ত করা হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়। পরে তা শনাক্ত হয়েছে বেলজিয়াম, বোতসোয়ানা, ইসরাইল এবং হংকংয়ে।
ডাচ্‌ কর্তৃপক্ষ বলেছে, শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুটি ফ্লাইট অবতরণ করে আমস্টারডামে। এতে ফেরেন প্রায় ৬০০ মানুষ। এর মধ্যে ৬১ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষ বলছে, আরও নিশ্চিত হতে এবং কি ভ্যারিয়েন্টে তারা আক্রান্ত তা নির্ধারণের জন্য তাদের পরীক্ষা চলছে।
যেসব মানুষ ওই ফ্লাইটে ফিরেছেন তার মধ্যে ডাচ্‌ ফটোগ্রাফার পলা জিমারম্যান আছেন। তিনি পরীক্ষায় নেগেটিভ হয়েছেন। তা সত্ত্বেও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে। কর্তৃপক্ষ বলেছে পরের ৫ দিনে পরীক্ষায় আরও মানুষ পজেটিভ প্রমাণিত হতে পারেন। ফলে যে বিমানে প্রচুর পরিমাণ মানুষকে বহন করা হয়েছে এবং তাদের কেউ কেউ করোনা পজেটিভ হয়েছেন- সেই বিমানে ছিলেন জিমারম্যান- এটা ভেবেই তার ভয় হচ্ছে।
ওমিক্রন আতঙ্কে এরই মধ্যে শুক্রবার থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বা বিধিনিষেধ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, কানাডা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। এর আগে ঘোষিত ভ্রমণ বিধিনিষেধ ঘোষণা করে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লোকজনকে দক্ষিণ আফ্রিকার আটটি দেশ সফরে না যেতে পরামর্শ দিয়েছে। শনিবার অস্ট্রেলিয়া বলেছে, দক্ষিণ আফ্রিকার ৯টি দেশ সফর করেছেন এমন বিদেশি নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ওইসব দেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ার কোনো নাগরিক দেশে ফিরলে তাদেরকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। জাপান ও বৃটেন বলেছে, তারা অধিক পরিমাণ আফ্রিকান দেশের বিরুদ্ধে ভ্রমণ বিধিনিষেধ সম্প্রসারণ করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ওমান, কুয়েত এবং হাঙ্গেরি নতুন করে ভ্রমণ বিধিনিষেধ দিয়েছে।
অন্যদিকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটন এবং অর্থনীতির অন্য খাতগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার বলেছে, যেসব দেশ এসব ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা পুনরায় বিবেচনা করতে অনুরোধ জানানো হবে তাদেরকে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর