কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে ভোটগ্রহণের ২ দিন পর নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেনি রিটার্নিং কর্মকর্তা। সব ক’টি কেন্দ্রে ঘোষিত ফলাফলে বিজয়ী হওয়ায় দ্রুত ফলাফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল গফুর। অপরদিকে ভোট পুনঃগণনার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীসহ অপর তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এই পাল্টাপাল্টি দাবি করা হয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল গফুর সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ইউনিয়নের ১০টি কেন্দ্রে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসাররা নির্বাচনী এজেন্টদের লিখিতভাবে ও প্রতিটি কেন্দ্রে নোটিশ বোর্ডে ভোটের ফলাফল টাঙিয়ে দেন। এই ফলাফল অনুযায়ী তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শাহজামাল সরকারের চেয়ে ৫০ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু ভোটের ফলাফল প্রদান শেষে ফিরে আসার পথে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনার অজুহাতে ফলাফল দিতে গড়িমসি করছে রিটার্নিং কর্মকর্তা। অপরদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজামাল সরকার ও আইয়ুব আলী সরকার কারচুপি ও ব্যালট ছিনতাইয়ের কারণে তিনটি কেন্দ্রের ভোট পুনঃগণনা ও একটি কেন্দ্রে পুনঃনির্বাচন দাবি করেছেন। তারা অভিযোগ করেন, পোলিং এজেন্টদের স্বাক্ষর ছাড়াই কয়েকটি কেন্দ্রে কারচুপি করে ফল ঘোষণা করা হয়।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের ঝুনকার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. আবু তোয়াব কুড়িগ্রাম সদর থানায় দায়ের করা এক এজাহারে জানিয়েছেন, নির্বাচন শেষে সকল প্রার্থীর মনোনীত এজেন্টদের সামনে ফলাফল ঘোষণা করে নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দেন। এরপর নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার পথে বারবিশ ঘাটের কাছে মোটরসাইকেল প্রতীকধারী পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা রাম দা, লাঠি, ছোরা নিয়ে পেছন থেকে হামলা করে। হামলাকারীরা ব্যালট বাক্স ব্যতীত ব্যালট পেপার ও নির্বাচনী মালামালের বস্তা নিয়ে চলে যায়। তবে ফলাফলের শিট রক্ষিত ছিল। এদিকে ফলাফল ঘোষণার বিলম্বের কারণ সম্পর্কে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সদর উপজেলার প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী মালামাল বুঝে না পাওয়ায় ফলাফল ঘোষণা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কমিশনের পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন তারা।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার জানান, ব্যালট ছিনতাই বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসের দায়ের করা মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। মালামাল উদ্ধার ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গির আলম জানান, গত ২৮শে নভেম্বর কুড়িগ্রাম জেলার ৩ উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। যাত্রাপুর ইউনিয়নের একটি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণার পর মালামাল লুট হয়ে যায়। এ জন্য কিছুটা জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের মতামত পেলে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানানো হবে।