টাঙ্গাইলের গোপালপুর ও ঘাটাইল উপজেলার ধোপাকান্দি এবং দেউলাবাড়ি ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কয়ারখাল। একটা সময় এ খাল ছিল কৃষকের জন্য আশীর্বাদ। আর এখন এটি অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংস্কার না করায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে জলাবদ্ধতায় সহস্রাধিক একর জমির ফসল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সামান্য বৃষ্টি হলেই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মানুষের বসতবাড়িতে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যার ফলে বছরের ৬ মাস এসব গ্রামের মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করেন। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় খালটি এখন ভরাট হয়ে গেছে। ফলে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, ধোপাকান্দি ইউনিয়নের গুর্জশাখাই বিলের চারদিকে কামদেববাড়ি, ভুটিয়া, রামজীবনপুর, চক সোনামোদী ও পঞ্চাশ গ্রাম অবস্থিত। সুজনবাড়ি গ্রামের কৃষক আবু হানিফ বলেন, এক দশক আগেও বিলের উর্বর জমিতে ফলন হতো বোরো ও আমন ধান। বছরে দুটি ফসল উৎপন্ন হওয়ায় কৃষকদের ভাত নিয়ে ভাবতে হতো না। কিন্তু কালক্রমে খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় বিলের পানি নিষ্কাশন প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিলের দুই ফসলি জমি এক ফসলি জমিতে পরিণত হয়। ধোপাকাদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, খালটি সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) একটি দল সরজমিন তদন্ত করে গেছেন। দেউলাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বর্ষা মৌসমে ও সামান্য বৃষ্টিপাত হলে এক গ্রামের মানুষ আরেক গ্রামে কিংবা হাটে-বাজারে যাতায়াত করতে নৌকা বা ভেলায় পারাপার হতে হয়। বিশেষ করে আইনপুর ও বাহাদিপুরের মানুষদের বাড়িতে বন্দি জীবন কাটাতে হয়। এ ছাড়াও আবাদি জমির ফসল কৃষক ঘরে তুলতে পারে না। যার ফলে এসব অঞ্চলের মানুষকে অর্ধাহারে-অনাহারে বছরের অর্ধেক সময় কাটাতে হয়। ছেলেমেয়েরা স্কুল-কলেজে যেতে পারে না। দ্রুত এই খালটি সংস্কারের দাবি জানান তিনি। উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরজমিন তদন্তের পর খাল খননের জন্য একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই খালটি সংস্কারের কাজ শুরু করা যাবে।