মার্ক এন্ড রিজব্যাক বায়োথেরাপিউটিকস দ্বারা তৈরি অ্যান্টিভাইরাল পিলের সমর্থনে এফডিএ (যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) উপদেষ্টা প্যানেল মঙ্গলবার ১৩-১০ ভোট দিয়েছে। করোনায় গুরুতর অসুস্থ হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা প্রাপ্তবয়স্কদের চিকিৎসা করতে ওই পিল ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে। যদিও এর কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
আমেরিকান নিউজ ওয়েবসাইট এক্সিওস এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- নতুন ভ্যারিয়েন্ট আবির্ভূত হওয়ার প্রেক্ষিতে যদি কার্যকর প্রমাণিত হয়, তাহলে ওরাল (মুখে খাওয়ার) অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ করোনা প্রতিরোধ বা চিকিৎসার জন্য মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। অনুমোদিত হলে, মলনুপিরাভির নামে পরিচিত মার্কের ওষুধটি যুক্তরাষ্ট্রে পাওয়া যাওয়া এ ধরনের প্রথম চিকিৎসা হবে।
বেশিরভাগ প্যানেলিস্ট বলেছেন, তারা বিশ্বাস করেন যে ওষুধটির ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত এবং গর্ভবতী নারী বা শিশুদের জন্য এর ব্যবহারকে অনুমোদন করা এফডিএ'র উচিত হবে না। বেশ কয়েকজন ওষুধটির "নিরাপত্তা প্রোফাইল" নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন যে এটি কঠোরভাবে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা উচিত।
১,৪০০ জনেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্কদের উপর করা গবেষণার ভিত্তিতে মার্ক গত সপ্তাহে বলেছিল যে মলনুপিরাভির হালকা বা মাঝারি মাত্রার করোনা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি বা মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৩০% কমিয়েছে।
উপসর্গ শুরু হওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে এই চিকিৎসা শুরু করা হয় এবং বাড়িতেই এই চিকিৎসা করা যেতে পারে।
এখন মলনুপিরাভিরের প্রতি উৎসাহ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে কারণ গত সপ্তাহে মার্ক তার হালনাগাদ করা ডেটা প্রকাশ করেছে যেখানে বলা হয়েছে যে ওষুধটি প্রাথমিকভাবে করা রিপোর্ট থেকে কম কার্যকর।
এদিকে, উপদেষ্টা প্যানেলের ভোট এমন সময়ে আসলো যখন বিভিন্ন দেশ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রতিক্রিয়া জানাতে উন্মুখ হয়ে আছে৷
এ নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। কিন্তু রকফেলার ইউনিভার্সিটির ইমিউনোলজিস্ট মিশেল নুসেনজওয়েগ ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেন, চিকিৎসার পদ্ধতিগত কারণে মার্কের মতো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলো নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধেও স্বাভাবিকভাবেই কাজ করবে বলে মনে হচ্ছে।
এফডিএ প্যানেলের ওই সুপারিশ মানবে কিনা সেটা তাদের নির্ধারণ করতে হবে, যদিও সাধারণত তারা তা করে থাকে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, অনুমোদিত হলে, পিলটির সরবরাহ শুরুতে সীমিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাইডেন প্রশাসন ইতিমধ্যেই প্রায় ৩১ লাখ লোকের জন্য ওষুধের পর্যাপ্ত কোর্স কিনতে সম্মত হয়েছে।
ফাইজার এফডিএ'র কাছে প্যাক্সলোভিড নামে তাদের তৈরি অনুরূপ আরেকটি অ্যান্টিভাইরাল পিলের জরুরি অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে।
কোম্পানিটির মতে, গুরুতরভাবে করোনাক্রান্ত উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা লোকদের হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর ঝুঁকি ৮৯% কমাতে ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলোতে ফাইজারের ওই পিলের ব্যবহার পদ্ধতি দেখানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, কোভিড চিকিৎসায় মুখে খাওয়ার ঔষধ মলনুপিরাভির। মলনুপিরাভির একটি ট্যাবলেট বা বড়ি। করোনার চিকিৎসায় এই ঔষধটি দিনে দুইবার ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদেরকে দেয়া হয়। মূলত এই ঔষধটি ফ্লু এর চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।