বাংলারজমিন

রৌমারীতে সেই অধ্যক্ষ সাময়িক বরখাস্ত

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

২০২১-১২-০৩

৩৬ শিক্ষার্থীর ফরম ফিলাপ না করা সেই অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটি তাকে বরখাস্ত করে। জালিয়াতি, প্রতারণা, ঘুষ গ্রহণ, অতিরিক্ত ফি আদায়, ইচ্ছাকৃতভাবে অকৃতকার্য করে টাকার বিনিময়ে কৃতকার্য করা, শিক্ষার্থীদের হুমকিসহ তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে ফরম ফিলাপ বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও কলেজের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই অধ্যক্ষের নাম হুমায়ুন কবির। তিনি রৌমারী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান বলেন, অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির তার প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দের অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর থেকে অতিরিক্ত ফি নিয়েছিলেন। ফলে ২০১৯ সালে ওই শিক্ষার্থীদের তিনি ফরম ফিলাপ করতে না পেরে ২০২০ সালে ফরম ফিলাপ করেন। এটি একটি মারাত্মক প্রতারণা। যার ফলে ৩৬ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। এখন বাধ্য হয়ে তাদের প্রথম বর্ষের পরীক্ষাই দিতে হচ্ছে। তাদের জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে গেল। এ অপরাধে অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত ও তার এমপিও বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এদিকে এ ঘটনার পর অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবিরের নতুন নতুন দুর্নীতির খবর বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এলাকার একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রৌমারী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রেজওয়ানুল হক পাখি। পাখির মৃত্যুর পর অধ্যক্ষ তার বড় ভাই রৌমারী সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রাকে প্রতিষ্ঠাতা বানান। যা নিয়ম বহির্ভূত। তিনি মেধাবী শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় যে কোনো একটি বিষয়ে অকৃতকার্য করে ২ থেকে ৩ হাজার করে টাকা ঘুষ নিয়ে আবার তা কৃতকার্য করে দিতেন। প্রতি বছর বরাদ্দের অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর থেকে টাকা নিয়ে ফরম ফিলাপ করাতে না পেরে পরের বছর পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করতেন। এ কারণে ওই শিক্ষার্থী যদি উচ্চবাচ্য করতো তাহলে তার ব্যবহারিক মার্ক কমিয়ে দেয়ার হুমকি দিতেন। ফলে ওই শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে আর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারতো না।
একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, তারা দুই ভাই মিলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কারিগরি শাখার শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ করানোর নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন। ফরম ফিলাপের আগে তাদের নিজের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে এমন শর্ত দেয়া হতো। ভর্তি করানোর জন্য নেয়া হত ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। পরিচয়পত্র দেয়ার নাম করেও ৩ থেকে ৫শ’ টাকা নেয়া হতো। জেলা শিক্ষা অফিসার শামছুল আলম জানান, বিধি মোতাবেক অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার এমপিও বাতিলসহ শাস্তির ব্যাপারে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status