× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আমিনবাজারে ৬ ছাত্র হত্যা /১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
৩ ডিসেম্বর ২০২১, শুক্রবার

ঢাকার আমিনবাজারে দশ বছর আগে ডাকাত সন্দেহে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা মামলার ১৩ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। অন্য একটি ধারায় তাদের ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে রায়ে। বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়া, অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার বাকি ২৫ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। মামলায় অভিযুক্ত ৬০ আসামির মধ্যে তিনজন বিচার চলাকালেই মারা যান।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১৩ আসামি হলো- আব্দুল মালেক, সাঈদ মেম্বার, আব্দুর রশীদ, ইসমাইল হোসেন, জমসের আলী, মীর হোসেন, মজিবর রহমান, আনোয়ার হোসেন, রজ্জব আলী সোহাগ, মো. আলম, মো. রানা, মো. হামিদ, মো. আসলাম।

যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ১৯ আসামি হলো- শাহীন আহম্মদ, মো. ফরিদ খান, মো. রাজিব হোসেন, মো. ওয়াসিম, মো. ছাত্তার, মো. সেলিম, মনির হোসেন, মো. আলমগীর, মোবারক হোসেন, অখিল খন্দকার, মো. বশির, রুবেল হোসেন, মো. নুর ইসলাম, মো. শাহাদাত হোসেন জুয়েল, মো. টুটুল, মো. মাসুদ, মো. মোখলেছ, মো. তোতন ও মো. সাইফুল ইসলাম।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী আব্দুল মতিন, আনন্দ চন্দ্র বিশ্বাস, শাকিলা জিয়াসমিন মিতু ও ফারুক আহাম্মদ। পরে আব্দুল মতিন বলেন, এটি একটি বৃহৎ ঘটনার মামলা। আমরা অনেকদিন ধরে অনেক কষ্ট করে মামলার ৯২ জনের মধ্যে ৫৫ জন সাক্ষীকে আদালতে এনে সাক্ষ্য করিয়েছি।
আমরা রায়ে সন্তুষ্ট।

নথি থেকে জানা যায়, ২০১১ সালে আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামে ছয়জনকে পিটিয়ে হত্যার ওই ঘটনা পুরো দেশকে স্তম্ভিত করে দেয়। পুলিশের অভিযোগপত্র পেয়ে ২০১৩ সালে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ৬০ আসামির বিচার শুরু করে আদালত। সাক্ষ্য আর যুক্তিতর্ক শেষ করে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসতে লেগে যায় আট বছর।

রায়ের পর আদালতে উপস্থিত দণ্ডিত কয়েকজন আসামির স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের কয়েকজন এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথাও বলেন। তবে নিহত বাঙলা কলেজের ছাত্র কামরুজ্জামানের বাবা আব্দুল কাদের সুরুজ রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট, রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়। নিহত ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশের বাবা মজিবর রহমান এবং ইব্রাহিম খলিলের বাবা আবু তাহেরও রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

নিহত ছয়জন হলেন- ধানমণ্ডির ম্যাপললিফ স্কুলের ‘এ’ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম শাম্মাম, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ইব্রাহিম খলিল, বাঙলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের তৌহিদুর রহমান পলাশ, তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান, মিরপুরে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের সিতাব জাবীর মুনিব এবং বাঙলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র কামরুজ্জামান। হামলায় গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান কেবল আল-আমিন। পরে তার কাছ থেকে সেই রাতের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়। ওই হত্যাকাণ্ডের পর সাভার থানা পুলিশ একটি মামলা করে, যাতে অজ্ঞাতপরিচয় গ্রামবাসীদের আসামি করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন।

অন্যদিকে ডাকাতির অভিযোগ এনে আল-আমিন এবং তার নিহত ছয় বন্ধুর নামে একটি মামলা করেন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী মালেক। পরে আলোচিত ওই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তে বেরিয়ে আসে, নিহত ছাত্ররা ডাকাত ছিল না।

আদালত সূত্র জানায়, মামলার ৫৭ আসামির মধ্যে ৪৫ জনকে সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে আনা হয়। এরপর তাদের রাখা হয় আদালতের হাজতখানায়। সেখান থেকে বেলা ১১টার পর এজলাসে তোলা হয়। মামলার মোট আসামি ৬০ জনের মধ্যে ইতিমধ্যে তিনজন মারা গেছেন। অবশিষ্ট ৫৭ জনের মধ্যে ৪৫ জন ছিলেন হাজতে। পলাতক রয়েছেন ১২ জন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর