রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে না পাঠিয়ে তাকে তিলে তিলে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শুক্রবার সকালে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটা মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে সচেতনভাবে, অত্যন্ত সচেতনভাবে হত্যা করা হচ্ছে-এই কথা আমরা বার বার বলছি। পৃথিবীর সমস্ত দেশ এটা জানে। আমাদের দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সংগঠন, বুদ্ধিজীবী সবাই বলেছেন যে, দেশনেত্রীকে বাইরে চিকিৎসার করার সুযোগ দেন। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আজকে এসব করে কোনো লাভ হবে না। জনগণ জেগে উঠতে শুরু করেছে এবং জেগে উঠবে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা-যমুনার অববাহিকায় উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে এবং তোমাদের তখতে তাউস ভেঙে ছারখার হয়ে যাবে।
নেতা-কর্মীদের জেগে উঠার আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, একবার ভাবেন, আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব তিনি ৮ হাজার মাইল দূরে আছেন। তার মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি প্রতি মুহুর্তে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন, যুদ্ধ করছেন-এই একটা অবস্থার মধ্যে আমাদের দায়িত্ব অনেক বেশি, আমাদের দায়িত্বই হচ্ছে প্রধান। আমাদেরকে আজকে জেগে উঠতে হবে।
এই দুরাত্মা, দুঃশাসনকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে আমাদেরকে ন্যায়-সত্য-মুক্ত-সুন্দর গণতন্ত্রের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, মুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে, দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
দলের চেয়ারপারসনের সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, তার (খালেদা জিয়া) রক্তক্ষরণ হচ্ছে এবং এই রক্তক্ষরণ যদি বেশিদিন চলে তা হলে তিনি বাঁচবেন না। তার যে রোগ হয়েছে আপনারা শুনেছেন- লিভার সিরোসিস। এই রোগ মারাত্মক রোগ। এই রোগের চিকিৎসা আমাদের দেশে সেইভাবে নাই। একমাত্র আমেরিকা, ইংল্যান্ড এবং জার্মানীতে এই রোগের চিকিৎসা ভালো হয়।
গত ১৩ই নভেম্বর থেকে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বসুন্ধরার এভার কেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড অবিলম্বে তাকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশ উন্নত সেন্টারে নেয়ার সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশের ভিত্তিতে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার ইতিমধ্যে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন। তবে সেই আবেদনের এখনো কোনো সুরাহা হয়নি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে এই মানববন্ধনে হয়। সহাস্রাধিক নেতা-কর্মী দলের চেয়ারপারসনের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন, আজকে জুম্মা বার, পবিত্র দিন। আমাদের নেত্রীর সুস্থতার জন্য দোয়া করি। আমরা এর আগে জুম্মার দিন আমরা দোয়া করেছি, বায়তুল মোকাররমে লক্ষ মানুষ দোয়া করেছে।প্রতিদিন প্রতি ওয়াক্তে নামাজের সময়ে আমাদের মা-বোনেরা তারা দোয়া করছেন-আল্লাহ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে আমাদের মধ্যে ফিরিয়ে নিয়ে আসো। এটা আপনি নেবেন কি করে? এটা কোন পুলিশ দিয়ে ঠেকাবেন? পারবেন না। মানুষের হৃদয়ের মধ্যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, সেই হৃদয়কে আপনি কেড়ে নিতে পারবেন না।
কৃষক দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা ছড়িয়ে পড়েন গোটা বাংলাদেশে। বাংলাদেশের সমস্ত কৃষকদেরকে, কৃষানীদেরকে বের করে নিয়ে আসেন ঘর থেকে তারা তাদের নেত্রীর জন্য, বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য, বাংলাদেশের আত্মার জন্য তারা সবাই আসুক রাজপথে দাঁড়াক । আমরা সবাই এক সাথে দেশনেত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাই, গণতন্ত্রকে মুক্ত করি তাহলে এটা হবে আমাদের পণ।
কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির ভাইস চেয়ারপারসন শামসুজ্জামান দুদু, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষক দলের গৌতম চক্রবর্তী, মোশাররফ হোসেন, গোলাম হাফিজ কেনেডী প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গত ২৫শে নভেম্বর থেকে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনগুলো সমাবেশ, মানববন্ধনের ধারাবাহিক কর্মসূচি করে যাচ্ছেন। আগামীকাল ছাত্রদলের সমাবেশের মধ্য দিয়ে ৮দিনের এই কর্মসূচি শেষ হবে।
Khan
৩ ডিসেম্বর ২০২১, শুক্রবার, ৩:০২শুধু বক্তৃতা দিয়ে কোন লাভ আছে? খালেদা জিয়াকে ছাড়বে মনে করেছেন? কখনই না। এই রকম ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ হলে কোন পথে আগাত সেটা বোঝেন না? না বুঝলে আপনারা খালি বসে বসে আঙ্গুল চোষেন।