× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিদ্রোহ কমানোর চেষ্টা সিলেট আওয়ামী লীগের

শেষের পাতা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
৪ ডিসেম্বর ২০২১, শনিবার

শফিক-নাসিরের টিমওয়ার্কে মুখ রক্ষা হচ্ছে সিলেট আওয়ামী লীগের। ভরাডুবির লজ্জা থেকে উতরে উঠছে আওয়ামী লীগ। তবে, চলমান ইউনিয়ন নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে বিরোধ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। প্রার্থিতা নিয়ে বিদ্রোহের কারণে নিশ্চিত থাকার পরও জয় হাতছাড়া হচ্ছে। এ কারণে চতুর্থ দফা নির্বাচনে সিলেটের বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জে বিদ্রোহ কমাতে চেষ্টা করা হচ্ছে। সাংগঠনিক দুরবস্থা, নেতাকর্মীদের মধ্যে দূরত্ব থাকার কারণে ২০১৯ সালে দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশে নতুন ফরম্যাটে গঠন করা হয় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। সম্মেলনের মাধ্যমে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয়েছিল এডভোকেট লুৎফুর রহমানকে ও সাধারণ সম্পাদক হন নাসির উদ্দিন খান। সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীকে পরবর্তীতে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি করা হয়।
কয়েক মাস আগে মৃত্যুবরণ করেছেন এডভোকেট লুৎফুর রহমান। তার মৃত্যুর পর নতুন সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে শফিকুর রহমান চৌধুরীকে। শফিক-নাসির এখন চালাচ্ছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড। এরইমধ্যে প্রথম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এই দুই নেতা। সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে তারা মাঠে ঘাম ঝরিয়েছেন। ফলশ্রুতিতে নৌকার বিজয় হয়েছে ওই আসনে। এরপর ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে তারা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আগেরমতো আর সিলেট জেলা আওয়ামী লীগে কোন্দল নেই। কমিটিতে এসেছেন অনেক নতুন মুখ। শফিকুর রহমান চৌধুরী ও নাসির উদ্দিন খানের নেতৃত্বে তারাও টিমওয়ার্কে শরিক হচ্ছেন। এবারের ইউনিয়ন নির্বাচনে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচনে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার আগেই জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একেকটি উপজেলা সফর করছেন। সেখানে তারা সভার আয়োজন করছেন। আর এই সভায় ভোটের মাধ্যমে ইউনিয়নের নৌকার প্রতিনিধি নির্বাচিত করছেন। প্রার্থী নির্বাচনে তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অবলম্বন করায় বিদ্রোহ থাকলেও বিতর্ক কম হচ্ছে। সিলেট জেলায় প্রথম ধাপে কোথাও ইউনিয়ন নির্বাচন হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় কোম্পানীগঞ্জ, সদর ও বালাগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়নে নির্বাচন হয়েছে। প্রথম নির্বাচনে কিছুটা হোচট খেয়েছিল আওয়ামী লীগ। বিদ্রোহী মিলে ৮টি ইউনিয়নে জয় ঘরে তুলেছিল। এর মধ্যে নৌকার ৬ জন প্রার্থী জয়লাভ করেন। বিএনপি, জামায়াত ও খেলাফত মজলিসের নেতারাও প্রার্থী হয়ে ওই নির্বাচনে চমক দেখিয়েছিলেন। কিন্তু তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অনেকখানি সফল হয়েছে আওয়ামী লীগ। গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও দক্ষিণ সুরমার ১৬ ইউনিয়নে নির্বাচন হয়। এর মধ্যে ৯টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। ৩টিতে বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন। বিদ্রোহীসহ ১২টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। ফলে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে এসে এগিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাটের বেশিরভাগ ইউনিয়নে বিএনপি নেতারা প্রার্থী হলেও তারা জয় ঘরে তুলতে পারেনি। অনেক ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা বিএনপি দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও পরাজিত হয়েছেন। ফলে আওয়ামী লীগে আত্মবিশ্বাস আরও বেড়েছে। চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জের ২২টি ইউনিয়নের নির্বাচন। জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, একই প্রক্রিয়ায় ওই ২২ ইউনিয়নেও প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। এরইমধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হয়েছে। আগামী ৬ই ডিসেম্বর হচ্ছে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন। এই দুই উপজেলায় প্রার্থী তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে- গোলাপগঞ্জে বিদ্রোহের মাত্রা খুবই কম। মাত্র দুইজন প্রার্থী দলীয় সিদ্বান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন। তবে, বিয়ানীবাজারে বিদ্রোহের মাত্রা বেশি। বিয়ানীবাজারে তৃণমূলের রায়ে প্রথম হওয়া ৩ প্রার্থীকে দেয়া হয়নি নৌকার মনোনয়ন। এ কারণে ওই ৩ ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। বিষয়টি নিয়ে ভাবছে সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা জানিয়েছেন, বিদ্রোহ কমাতে পারলে জয় নিশ্চিত হওয়া যায়। কারণ- এবারের ইউনিয়ন নির্বাচনে কোনো প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে না। যারাই প্রার্থী হচ্ছেন তারা যোগ্যতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন। মাঠে বিদ্রোহ থাকলে জয় ঘরে তোলা অসম্ভব। এ কারণে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে বিদ্রোহ কমাতে চেষ্টা করা হচ্ছে। নেতারা বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। নেতারা জানান, যোগ্য দেখেই প্রার্থী দেয়া হচ্ছে। দলের স্বার্থ বিবেচনায় প্রার্থী দেয়া হচ্ছে। ব্যক্তিস্বার্থকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে না। সিলেটে চলমান ইউনিয়ন নির্বাচনে ঘাম ঝরাচ্ছেন শফিকুর রহমান চৌধুরী ও নাসির উদ্দিন খান। প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নের নির্বাচনে নৌকার পক্ষে প্রচারণায় তারা ছুটে যাচ্ছেন। নির্বাচনী প্রচারকালে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে অনেক ইউনিয়নের নির্বাচনে তাদেরকে পড়তে হচ্ছে বিদ্রোহীদের মুখোমুখি। এটা তাদের জন্য হচ্ছে বিব্রতকর পরিস্থিতি। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, বিদ্রোহ ভাবাচ্ছে সিলেট আওয়ামী লীগ। এজন্য বিদ্রোহ কমানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। বিদ্রোহ কমলে জয়ের ধারা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন তারা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর