× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঢাকায় লরি চাপায় শিক্ষার্থী ও ট্রাক চাপায় গণমাধ্যমকর্মী নিহত

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
৫ ডিসেম্বর ২০২১, রবিবার

রাজধানীর পৃথক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় আবারো এক শিক্ষার্থী ও এক গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। তারা হলেন- গ্রীন ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান লিমন (২২) ও দৈনিক সংবাদ পত্রিকার প্রুফ রিডার এমদাদ হোসেন (৬০)। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে বিমানবন্দর সড়ক ও কলেজগেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা দু’টি ঘটে। নিহত দু’জনই মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। তাদের চাপা দেয় লরি ও ট্রাক। ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ মর্গে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।
নিহত শিক্ষার্থীর বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট মো. মোজাম্মেল হক জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার দমদমা পশ্চিম গ্রামে। তিনি (বাবা) থাকেন চট্টগ্রামে।
মা মোসলেমা বেগমের সঙ্গে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় থাকতেন ২ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে মেজ মাহাদী। দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসে ছেলের লাশ দেখতে পান।
খালিদ মাহমুদ টুটুল নামে এক সহপাঠী জানান, শেওড়াপাড়ার গ্রীন ইউনিভার্সিটিতে পড়েন তারা। গতরাতে গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট থেকে তার মা ঢাকায় আসছিলেন। তখন সে ঝিগাতলায় খালার বাসায় ছিল। মাকে আনার জন্য খালার বাসা থেকে নিজের মোটরসাইকেল নিয়ে উত্তরাতে যাচ্ছিলো সে। তিনি জানান, প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছে, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিমানবন্দর কাউলা পদ্মাঅয়েল আউট গোয়িংয়ে একটি লরি পেছন থেকে তাকে ধাক্কা দেয়। এতে সে পিচলে পড়ে গেলে লরির চাকা তার মাথার উপর দিয়ে উঠে যায়। এতে তার মাথায় থাকা হেলমেটটিও গুঁড়িয়ে যায়। পরে মাহাদীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। বাবা মোজাম্মেল হক জানান, চিকিৎসার জন্য শুক্রবার রাতে গ্রাম থেকে আবার ঢাকায় আসছিলেন মাহাদীর মা। ছেলের মৃত্যুর খবর না দিয়েই মাঝ রাস্তা থেকে বাড়িতে চলে যেতে বলা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে লাশ দাফন করা হবে।
বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান শেখ জানান, রাতে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিল ওই তরুণ। তখন লরির চাপায় আহত হলে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ৩টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এসআই আরও জানান, ওই যুবকের কাছে থাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পরিচয় জানা যায়। লরিটি আটক করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে বলে জানান এসআই।
এদিকে, শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মিরপুর রোডের কলেজ গেটে মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারের সামনে ট্রাকচাপায় এমদাদ হোসেন নামে এক গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি দৈনিক সংবাদে প্রুফ রিডার হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনায় ট্রাকের চালক ও ট্রাকটি শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত আড়াইটার দিকে তার মোটরসাইকেলকে দ্রুতগতির একটি ট্রাক চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা মোহাম্মদপুর থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সংবাদকর্মীর ছোট ভাই সেলিম জানান, আমার বড় ভাই দৈনিক সংবাদে কাজ করতেন। রাতে অফিস শেষ করে মোটরসাইকেলে করে বাসায় ফিরছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারের সামনে আসার পর পেছন থেকে একটি ট্রাক তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করবেন কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন নৃশংস দুর্ঘটনায় যেহেতু কাউকে শনাক্ত বা ট্রাক আটক করা যায়নি, তাহলে কার বিরুদ্ধে মামলা করবো? আমরা কোনো মামলা করছি না। ময়নাতদন্ত শেষ হলে মরদেহ টাঙ্গাইলের নাগপুরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাবো।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ বলেন, চাপা দিয়ে পালিয়ে যাওয়া ট্রাকটি শনাক্তে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ময়নাতদন্তের জন্য আমরা মরদেহটি মর্গে পাঠিয়েছি।
উল্লেখ্য, গত ২৪শে নভেম্বর রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নাঈম হাসান নামে নটর ডেম কলেজের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এর ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই পান্থপথ মোড়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ময়লাবাহী গাড়ির চাপায় গণমাধ্যমকর্মী মো. আহসান কবির খান নিহত হন। এরপর গত ২৯শে নভেম্বর রামপুরায় দুই বাসের রেষারেষিতে প্রাণ যায় এসএসসি’র ফলপ্রত্যাশী মাইনুদ্দিন ইসলাম দুর্জয়ের।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর