বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নালাগুলো যেন এখন মরণফাঁদ হয়ে ওঠেছে। এবার শহরের এক অরক্ষিত নালায় পড়ে মোহাম্মদ কামাল নামে এক পথশিশু নিখোঁজ হয়েছে। দুদিন হয়ে গেলেও তার কোন হদিস মেলেনি।
জানা যায়, রাকিব নামে আরেক শিশুর সাথে মিলে বোতল কুড়াতে গিয়ে ১০ বছর বয়সী এই শিশুটি ষোলশহরের চাঁন্দগাও সার্কেলের ভূমি অফিসের সামনের নালায় পড়ে যায়। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় পরের দিন (মঙ্গলবার) বিকেলে। এরপর ফায়ার সার্ভিসসহ স্থানীয়রা শুরু করেন তল্লাশি। তবে আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত তার কোন হদিস মেলেনি ।

শিশু কামাল ষোলশহর স্টেশনে থাকা ভবঘুরে মোহাম্মদ কাউসারের ছেলে। চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট কামাল। তার জন্মের পর মা মারা যায়।

কামালের বাবা ভবঘুরে মোহাম্মদ কাউসার বলেন, সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কামালের নালায় পড়ে যাওয়ার খবর পাই। তখন কি করব বুঝতে পারছিলাম না। একটা লোক আমাকে বললো তার কাছে মিডিয়া আর ফায়ার সার্ভিসের নম্বর আছে। আমি বললাম আপনার যা করার করেন। এরপর সবাই এসে নালায় নেমে তার খোঁজ করছে।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মীর মাধ্যমে খবর পেয়ে বিকেল ৪টা রাত ৯ টা পর্যন্ত থেকে অভিযান চালিয়েছি। কিন্তু কোন খোঁজ পায়নি। ‘নিখোঁজ হওয়া শিশুর সঙ্গে থাকা অন্য শিশুটির সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। সে জানিয়েছে, বোতল খুঁজতে তারা দুজন নালায় নেমেছিল।
তিনি বলেন, 'ময়লা বেশি থাকার কারণে আমাদেরকে উদ্ধার কাজে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। আশা করছি আমরা তার খোঁজ পাবো।'

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৯শে জুন নগরীর চান্দগাঁওয়ে সিএনজি অটোরিকশা নালায় পড়ে তিন যাত্রী মারাত্মক আহত হয়। এর মাত্র ১১ দিনের মাথায় ৩০শে জুন সকালে নগরীর ষোলশহর চশমা হিলে অরক্ষিত খালে সিএনজি অটোরিকশা তলিয়ে গিয়ে এক নারীসহ ২ জনের মৃত্যু হয়। এরপর ৫ই আগস্ট মুরাদপুরে নালায় পড়ে ব্যবসায়ী সালেহ আহমদ নিখোঁজ হয়। যার এখনো হদিস পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ গত ২৭ সেপ্টেম্বর আগ্রাবাদ এলাকার একটি নালায় পড়ে সেহেরীন মাহবুব নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর করুণ মৃত্যু হয়।