রেললাইনে খেলতে গিয়ে ট্রেনের চাকায় কাটা পড়ে ৩ ভাইবোনসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সকালে নীলফামারী- সৈয়দপুর রেল সড়কের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের বউবাজার নামক স্থানে। স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকার রেজোয়ান হোসেনের শিশুপুত্র মমিনুর রহমান (৩), শিশুকন্যা রেশমা বেগম (৪) ও লিমা বেগম (৭) রেললাইনের উপর খেলা করার সময় চিলাহাটী থেকে খুলনাগামী একটি ‘খুলনা মেইল’ ট্রেন কাছাকাছি চলে আসে। এসময় তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে একই এলাকার সালমান ফার্সি ওরফে শামীম আহমেদও (৩০) ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। তাকে নীলফামারী সদর হাসপাতালে নেয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা জানায়, ঘটনাস্থলের কাছেই একটি ট্রলি থেকে ইট নামানোর শব্দ আর ঘন কুয়াশার কারণে খেলায় মগ্ন থাকা ৩ ভাইবোন ট্রেনের শব্দ বুঝতে না পারায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শোকে কাতর নিহত ৩ শিশুর মা শেফালী বেগম (২৮) মুহূর্তে সংজ্ঞা হারানোয় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। একই ঘটনায় ৩ শিশুর নানা সংজ্ঞা হারানো আবুল কাশেম (৬০) দুপুরে মারা যান।
এক গ্রামে ৫ মৃত্যুর ঘটনায় গোটা গ্রাম যেন শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন শত শত গ্রামবাসী। সান্ত্বনা দেয়ার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছেন তারা। এর মধ্যেই চলছে তাদের দাফন কাফনের ব্যবস্থা। এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, নিহত শিশুদের বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দেয়া শামীম আহমেদ চিত্রজগতের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ‘ঢাকা এ্যাটাক’ ছবিতে অভিনয় করেছেন বলে তার নিকটজনরা জানায়। করোনা বাস্তবতায় তিনি বাড়ি ফিরে আসেন এবং ঘটনাস্থলের কাছেই রেলওয়ের একটি নির্মাণাধীন ব্রিজের দেখাশোনার কাজ নেন। তিনি একই এলাকার আনোয়ার হোসেনের পুত্র। তার অকাল মৃত্যুতে স্ত্রী সুমি আক্তার (২৫) বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। একমাত্র শিশুকন্যা অবুজ শান্তনার (৬) ফ্যাল ফ্যাল চাহনি মাতম বাড়িয়েছে নীলফামারী সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের মনষাপাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় প্রায় দুই ঘণ্টা নীলফামারী- সৈয়দপুর রেলপথ বন্ধ থাকে। ওদিকে গত মঙ্গলবার ডিমলা উপজেলার বাবুরহাট এলাকায় মোটরসাইকেলের সঙ্গে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল চালক বিশ্বনাথ রায় (৩৬) নামের এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। সে ডিমলা সদর ইউনিয়নের উত্তর তিতপাড়া গ্রামের মিমানাথের ছেলে।