× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আপনার সন্তান কি জিপিএ-৫ পেয়েছে?

মত-মতান্তর

পিয়াস সরকার
৩১ ডিসেম্বর ২০২১, শুক্রবার

জিপিএ-৫। সর্বোচ্চ ফল প্রাপ্তিতে অভিভাবকরা ছোটাচ্ছেন ছড়ি। আহত ঘোড়ার মতো দৌঁড়ে কাহিল সন্তান। মানসিক কিংবা শারীরিক, কোন অসুখেই যেন এতোটুকু নাড়া দিতে পারে না অভিভাবকদের। জিপিএ-৫ যে চাই-ই চাই।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের ১৩-১৯ বছর বয়সী শহুরে ছেলে-মেয়েদের ৬০ শতাংশের বেশি মাঝারি থেকে তীব্র মানসিক চাপে ভোগেন। এই স্ট্রেস বা মানসিক চাপের ফলে তাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা ভুগছেন স্থূলতা এবং বিষন্নতায়।

বেশ ক’বছর আগের কথা। রাজধানীর এক নামী স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে পড়াতাম।
প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী সময় কাটানোর কথা হেসে খেলে। পড়বার কথা অ আ ক খ। কিন্তু সে পড়ছে কম্পিউটার, ধর্ম, সাধারণ জ্ঞানের মতো বিষয়। কেন? প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে কেন এসব জটিল বিষয় পড়তে হবে? আরো শুনে অবাক হবেন প্রথম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর বই সংখ্যা ছিল ১২টি।

বৃহস্পতিবার হয়ে গেলো এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের ফল। এতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ প্রথম চালু হয় ২০০১ সালে। সেবার সর্বোচ্চ ফল পেয়েছিলেন ৭৬ জন। প্রতিবছরই বাড়ছে জিপিএ-৫ ধারীর সংখ্যা। হ্যাঁ, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও। তবে পরীক্ষার্থীর থেকে জিপিএ-৫ ধারীর বৃদ্ধি কয়েকগুণ বেশি। এ যেন অসুস্থ প্রতিযোগীতা। যাতে সায় দিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা। আর মানসিক ফাঁদে ফেলে দেয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীরা করোনার থাবায় আহত ছিলেন। এরপর পরীক্ষা হয় মাত্র তিন বিষয়ে। বাকী বিষয়গুলোর নম্বর দেয়া হয় ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’র মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়া নিয়েও আছে নানা সমালোচনা। অনেক শিক্ষার্থী জেএসসি বা জেডিসি’তে খারাপ করায় সেই আঘাত লাগলো এখন। অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষা হওয়া তিন বিষয়ে ‘এ প্লাস’ পাবার পরেও হয়েছে ফল বিপর্যয়।

পরীক্ষার ফলের পর আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটে। কেন? এই দায় কার? অনেকেই এসব সংবাদের নিচে মন্তব্য করেন রসাত্মক। কিন্তু একবার ভেবে দেখেছেন, কি পরিমাণ অসুস্থ প্রতিযোগীতার চাপে পৃষ্ট তারা? এমনকি শিক্ষার্থীরা ‘পাশের বাড়ির আন্টি’র কটু কথার ভয়ে অস্থির।

জিপিএ-৫ সর্বোচ্চ ফল। এই ফল সবার কপালে থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। এমনকি এই ফল শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের চাবি কাঠিও নয়।

প্রথম আলোতে প্রকাশিত এই ছবিটা বেশ নজর কেড়েছিল সবার। আদরের সন্তানের সর্বোচ্চ ফল না মিললেও খুশি মা। দিচ্ছেন পরম ভালোবাসার চুমু। এইতো চাই। অভিভাবকরাইতো সন্তানের বন্ধু। বন্ধু যদি মানসিক চাপ দেয় তবে তো গড়ে উঠবে মানসিক অসুস্থ সমাজ। আপনার সন্তান যদি জিপিএ-৫ না পেয়ে থাকে তবে তাকে মানসিক শক্তি দিন। কারণ মানসিক অসুস্থ করে তুললে ক্ষতি আপনারই। কারণ সন্তানটা যে আপনার।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর