ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নে সপ্তম ধাপে অনুষ্ঠিত হবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন শৈলকুপা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হত্যা মামলার আসামি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। তিনি শৈলকুপার দামুকদিয়া গ্রামের উকিল মৃধা হত্যা মামলার ২৪নং আসামি। তবে- তিনি এ মামলায় জামিনে আছেন। হত্যা মামলার আসামি নৌকার মনোনয়ন পাওয়ায় এ নিয়ে দলের মধ্যে শোরগোল শুরু হয়েছে। নৌকার প্রার্থী জাহিদের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে সাধারণ ভোটারদের মাঝে।
জানা গেছে, শৈলকুপার দামুকদিয়া গ্রামে গত বছরের ২৫শে জুলাই সামাজিক দলাদলির জের ধরে রাশিদুল ইসলাম ওরফে উকিল মৃধা (৪৫) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী খুন হন। নিহতের ভাতিজা আজমীর শরীফ জানান, গত বছরের ২৩শে জুলাই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গ্রামে মারামারি হয়।
বিষয়টি মীমাংসার জন্য ২৫শে জুলাই রাতে শৈলকুপা থানা পুলিশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বৈঠকে যোগ দিতে রওনা হন উকিল মৃধা। কিন্তু পথের মধ্যেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ২৬শে জুলাই বাদী হয়ে ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যামামলা করেন। এই মামলায় নৌকার মনোনয়নপ্রাপ্ত যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদকে ২৪নং আসামি করা হয়েছে। একজন হত্যা মামলার আসামি কীভাবে নৌকার মনোনয়ন পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মনোহরপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু।
তিনি নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে নিজে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিবাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালে উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করায় শৈলকুপার এক প্রভাবশালী নেতার রোষানলে পড়েন। তার ভাষ্য জালিয়াতির মাধ্যমে তাকে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তার পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা। যার সনদ দিয়েছেন স্থানীয় এমপি আব্দুল হাই। এ ছাড়া তার পরিবারে কোনো জামায়াত বিএনপি নেই। বিষয়টি নিয়ে নৌকার মনোনয়প্রাপ্ত যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ষড়যন্ত্র করে আমাকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। তিনি যে বকুল মৃধা হত্যার সঙ্গে জড়িত না তা ইউনিয়নের শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত কেউ বিশ্বাস করেনি। তিনি দাবি করেন, তার প্রতিপক্ষ বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু তাকে খুনের মামলায় ফাঁসিয়েছেন, যাতে নৌকার মনোনয়ন না পায়। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু জানান, সকল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমরা জেলা আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রে পাঠিয়ে থাকি। মনোহরপুর ইউনিয়নে আমরা দুইজনকে সিলেকশন করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলাম। পরবর্তীতে জানতে পারলাম কেন্দ্রে একজনের নাম পৌঁছেছে। যে বা যারা এ কাজটি করেছে তারা কাজটি ঠিক করে নাই। উল্লেখ্য, আগামী ৭ই ফেব্রুয়ারি সপ্তম ধাপে অনুষ্ঠিত শৈলকুপার মনোহরপুর ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।