× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সিন্ডিকেটের গুজবে হুমকিতে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার

শেষের পাতা

আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া থেকে
১৯ জানুয়ারি ২০২২, বুধবার

২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে কলিং ভিসা স্থগিত হওয়ার পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ও গুজব কখনোই পিছু ছাড়েনি। এই শ্রমবাজারটি নিয়ে কৌতূহল একটু  বেশি সংশ্লিষ্ট সকলের কাছেই। তার কারণ বাংলাদেশি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের আদর্শ কর্মস্থান মালয়েশিয়া। এখনো বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ লাখ বাংলাদেশি বিভিন্ন খাতে কর্মরত রয়েছে। এখানে শুধু শ্রম বিক্রি করা নয় ব্যবসা, দোকানপাট, চাকরি, শিক্ষা গ্রহণ শিল্প-কারখানা স্থাপন সহ মাই সেকেন্ড হোম করে স্থায়ীভাবে করা সহজলভ্য। তাই শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে  দেশের ২য় বৃহত্তম মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার।
মালয়েশিয়ায় কলিং ভিসায় কর্মী যেতে গত ১৯শে ডিসেম্বর মালয়েশিয়া- বাংলাদেশ যৌথভাবে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে। এর পরে সমপ্রতি একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।  বলা হচ্ছে বাংলাদেশের ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সি ও তার সঙ্গে আরও ২৫০ সাব-এজেন্ট মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাবে।
বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম এই খবরটি প্রকাশ করেছে। এরপরে শুধু বাংলাদেশেই নয় মালয়েশিয়ায় এটা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে। তবে এই ২৫টি এজেন্সির সত্যতা এখন পর্যন্ত কোনো দায়িত্বশীল মন্ত্রণালয়  থেকে স্বীকার করা হয়নি।
 শ্রমবাজার সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা বলছেন এ ধরনের গুজবের জেরে এই শ্রমবাজারটি পুরোপুরি ওপেন হতে দীর্ঘায়িত হতে পারে এমনকি স্থগিতের হুমকিতেও পড়তে পারে।  মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী মিস্টার সারাভানানের কড়া সমালোচনা করেছেন দেশটির সুশীল সমাজ। বাংলাদেশের এই ২৫টি এজেন্সির বিষয়ে তিনিও প্রশ্নের মুখে পড়েছেন।
১৪ই জানুয়ারি সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রবাসী কল্যাণ  ও বৈদেশিক  কর্মসংস্থান মন্ত্রী মো. ইমরান আহমেদ ২৫ ও ২৫০ সিন্ডিকেটের কথা উড়িয়ে দেন। বলেন, কোন প্রক্রিয়ায় এবং কতো টাকার খরচায় মালয়েশিয়ায় কর্মী যাবে এই বিষয়টি চূড়ান্ত করতে মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ যৌথভাবে আরেকটি বৈঠক হবে। ঐ   বৈঠকের পর বলা যাবে আসলে কোন প্রক্রিয়ায় কর্মী মালয়েশিয়ায় যাবে। সমঝোতা স্মারক এমওইউ চুক্তিতে  কোথাও বলা হয়নি নির্দিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী পাঠাবে, সেখানে বলা হয়েছে বাংলাদেশের বৈধ যেকোনো এজেন্সির মাধ্যমে অথবা মালয়েশিয়া যাদের পছন্দ হয় তাদের মাধ্যমে কর্মী নিবে। তিনি বলেন, যেহেতু এখনো সেই চূড়ান্ত বৈঠক হয়নি তাহলে সিন্ডিকেটের প্রশ্ন আসছে  কেন? আর আপনারা এসব গুজবে কান দেন কেন?
সমপ্রতি মালয়েশিয়ার জাতীয় গণমাধ্যম ‘দ্য ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে’ মানবসম্পদ মন্ত্রী মিস্টার সারাভানান এর কড়া সমালোচনা করে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে যে এমওইউ চুক্তি করা হয়েছে  এবং সেখানে কি আছে সেটা জনসমক্ষে উপস্থাপন করা দরকার। তারা বলছেন- বাংলাদেশ থেকে ২৫ এজেন্সি ও ২৫০ সাব-এজেন্ট মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণ করবে- এই বিষয়টি যেন জনসমক্ষে ক্লিয়ার করা হয়। দেশটির  তেনাগানীর (মানবাধিকার সংস্থা) যোসেফ পল বলেছেন, মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তারা শ্রমিকদের জিম্মি করে জোরপূর্বক যদি কাজ আদায় করে তাহলে নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা  নেয়া হবে সে ব্যাপারে (এমওইউ) সমঝোতা স্মারকে কিছুই বলা হয়নি।  যোসেফ পল আরও বলেন, মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা কর্তৃক  শ্রমিকদের জিম্মি করে জোর করে শ্রম আদায়ের ঘটনা আগেও ঘটেছে, তাই এই বিষয়ে নীতিমালা দরকার। এদিকে বাংলাদেশ থেকে কলিং ভিসায় কর্মী নিতে বিরোধিতা করছে কিছু স্থানীয় এনজিও এবং কনজিউমার এসোসিয়েশন। কনজিউমার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ইউসুফ আজমি কর্তৃপক্ষের কাছে এক স্মারকলিপি জমা দিয়ে বলেন, আমাদের দেশে করোনাকালে লাখ লাখ মানুষ তাদের কাজ হারিয়েছে, তাই বিদেশ থেকে কর্মী আমদানি করা হলে মালয়েশিয়ানরা কাজ পাবে না।
তবে এসব আলোচনা-সমালোচনার জবাবে মানবসম্পদমন্ত্রী মিস্টার সারাভানান বলেন, আমি সরকারের উপমন্ত্রী হিসেবে ১৫ বছর ধরে কাজ করেছি। আমাদের দেশের স্বার্থ সুরক্ষা করেই এমওইউ চুক্তি সম্পন্ন করা হয়েছে। কিছু মানুষ এই চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তারা হলেন অতি উৎসাহী। তাদের জানাতে চাই, ২০১৮ সালে পাকাতান হারাপানের শাসিত সরকারের সময় বাংলাদেশের  থেকে কলিং ভিসায় কর্মী নেয়া স্থগিত করা হয়েছিল। আমরা সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নতুন করে শ্রমিক নিয়োগে সম্মত হয়েছি মাত্র, এর মধ্যে কি আছে? এমন বিশেষ কিছু নেই, আমরা আরও সমীক্ষা করে মালয়েশিয়ায় কর্মীর চাহিদাপত্র তৈরির  জন্য অনলাইন আবেদন চালু করা হয়েছে। সেই চাহিদা অনুসারে কর্মী নিয়োগ করা হবে আর আপনারা সমঝোতা স্মারকের বিভিন্ন চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন-এগুলো কোথায়  পেলেন?  কারণ সমঝোতা স্মারকপত্র এখনো জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর