× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

যে কারণে ক্ষোভের মুখে শাবি’র ভিসি

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২০ জানুয়ারি ২০২২, বৃহস্পতিবার

দ্বিতীয় মেয়াদে ভিসির দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ। তার হাত ধরে শাবিতে বড় অঙ্কের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। প্রথম মেয়াদে তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো অভিযোগ তুলেননি। দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার পরও ভিসির প্রতি কারও কোনো ক্ষোভ ছিল না। কিন্তু একটি ঘটনা পাল্টে দিলো সবকিছু। হঠাৎ ক্ষোভ দানা বাঁধে ক্যাম্পাসে। শুরু হয় ছাত্র বিক্ষোভ। আর এই ক্ষোভের প্রধান কারণ হলো- রোববার শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলা।
যখন আইসিটি ভবনের সামনে হামলা হয়, তার আগে ওই ভবনের ভেতরেই দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন ভিসি। নিজ কার্যালয় থেকে বের হয়ে বাসভবনে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করেছিলো। আর ওই সময় ভিসি আইসিটি ভবনের ভেতরে আশ্রয় নেন এবং সেখানেই আটকা পড়েন। পরে শিক্ষার্থীরা ওই ভবনের প্রধান গেইটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। এর আগে অবশ্য ভিসি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে ছিলেন। কিন্তু অবরুদ্ধ হওয়ার পরই ভিসি ক্যাম্পাসে ঘটনাস্থলে ডেকে আনেন পুলিশ। অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হতে তিনি পুলিশের সহযোগিতা চান। তখন সেখানে ছিলেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ। তিনি অবশ্যই ঘটনার পর থেকেই ক্যাম্পাসে রয়েছেন। ওই দিন আইসিটি ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থান নেয় পুলিশ। উপ-পুলিশ কমিশনার যখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন এক পাশ থেকে হঠাৎ শুরু হয় লাঠিচার্জ। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে; শিক্ষার্থীরা কোনো হামলা করার আগেই পুলিশ আইসিটি ভবনের ফটকের সামনে থাকা শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে। ১৫-২০ জন ছাত্রছাত্রীকে বেধড়ক লাঠিচার্জের দৃশ্য এমন কমই দেখা যায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু তুচ্ছ কারণে ঘটে গেল এমন ঘটনা। পুলিশের পিটুনি থেকে রক্ষা পেতে শিক্ষার্থীরা ভবনের কলাপসেবল ফটক ঘেঁষে শুয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলে ছাত্রীরা থাকলেও কোনো মহিলা পুলিশ সদস্যকে ওই সময় সেখানে দেখা যায়নি। কেউ কেউ চিৎকার করছিলেন। এ সময় পুলিশের পিটুনি খেয়ে একজন ছাত্র মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আর ওই ছাত্র মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পরপরই পুলিশ পিছু হটে। লাঠিচার্জের কারণে দূরে সরে আসা শিক্ষার্থীরা রুখে দাঁড়ায়। তারা নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ইট সুরকি নিয়ে পুলিশের ওপর পাল্টা চড়াও হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়া শুরু করে পুলিশ। এ সময় পিছু হটে দূরে চলে যায় পুলিশ। শিক্ষার্থীরা ধাওয়া করে ভবন থেকে একশ’ গজ দূরে চলে এলে পুলিশ পর পর কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে। এক পর্যায়ে রাবার বুলেট ছুড়ে। সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেটের শব্দে তখন দিগ্বিদিক দৌড়াতে থাকে শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের বাইরের আশপাশের লোকজন তটস্থ হয়ে পড়েন। সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে আতঙ্ক ছড়ায় বাইরেও। ওই সময় নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছিলেন সাংবাদিকরা। কারণ সাংবাদিকরা যে জায়গায় অবস্থান নিয়েছিলেন তাদের ঠিক সামনেই পড়তে থাকে সাউন্ড গ্রেনেড। টিয়ারশেলও এসে পড়ে সামনে। পুলিশের রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের মুখে শিক্ষার্থীরা টিকতে না পেরে আইসিটি ভবনের সামনে থেকে চলে যান। পরে পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার এসে তালা ভেঙে ভবনের ভেতর থেকে ভিসিকে উদ্ধার করেন। এবং পুলিশ পাহারায় ভিসিকে তার বাসভবনে পৌঁছে দেন। ঘটনার পরপরই আইসিটি ভবনের সামনে এম্বুলেন্স আসে। পুলিশের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। এতে এক নারী কনস্টেবল গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকেই এম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। উপস্থিত থাকা উপ-পুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখের নাকের উপরের অংশ থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। আর এ ঘটনার পর থেকেই ভিসির বিরুদ্ধে এক দফা আন্দোলনে যায় শিক্ষার্থীরা। ভিসির পদত্যাগ চায় তারা। এই দাবিতে গত তিন দিন ধরে তারা আন্দোলনে রয়েছে। গতকাল থেকে আমরন অনশন শুরু করেছে। এখন ভিসির পদত্যাগই তাদের কাছে মুখ্য। তবে- রোববারের ঘটনার পর ভিসি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ও পরদিন দুপুর ১২টার দিকে হল ত্যাগের নির্দেশ দিলেও সেই নির্দেশনা মানা হয়নি। বরং শিক্ষার্থীরা এখন হল দখলে নিয়েছে। তারা দুটি প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। ফটকে ব্যারিকেড দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, ভিসির নির্দেশেই পুলিশ হামলা করেছে। আর এতে ছোড়া হয়েছে সাউন্ড গ্রেনেড। পুলিশের হামলায় অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তারাও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা আহত হওয়ার পর ভিসি ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য বহিরাগতদের ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করেন। গতকাল তিনি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অশালীন বক্তব্যের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি এখন নানা ভাবে শিক্ষকদের বিভ্রান্ত করছেন। আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ভিসির বিরুদ্ধে আমাদের কখনোই ক্ষোভ ছিল না। বরং প্রভোস্টকে ঘিরেই ওই হলের ছাত্রীদের ক্ষোভ ছিল। ভিসি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ দিয়ে হামলা করিয়ে প্রভোস্টকে পদত্যাগ করিয়েছেন। তিনি এখন প্রথম ঘটনাটি টেনে এনে তার ‘অমার্জিত’ ভুলের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চাইছেন। তবে- ভিসি গতকালও শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
পাঠকের মতামত
**মন্তব্য সমূহ পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।
Yasin Khan
২০ জানুয়ারি ২০২২, বৃহস্পতিবার, ৫:৪৯

আপনি পদত্যাগ করুন। হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকের চিন্তার অবসান করুন।

Md. Harun al-Rashid
২০ জানুয়ারি ২০২২, বৃহস্পতিবার, ১২:৪৯

জোর করে পদ আকড়ে থাকলে হৃত সন্মান উদ্ধার হবে এমন ধারনা ভুল। শিক্ষকতার পেশায় ফেরৎ গিয়ে স্বীয় সন্মান পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করুন।

অন্যান্য খবর