× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রযুক্তি ব্যবহারে চার প্রস্তাব

শেষের পাতা

কাজী সোহাগ
২০ জানুয়ারি ২০২২, বৃহস্পতিবার

সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনার ঊর্ধ্বগতি চোখ রাঙাচ্ছে। জাতীয় পরামর্শক কমিটির পরামর্শক্রমে সরকার ইতিমধ্যে ১১ ধরনের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। কিন্তু জনসাধারণ 
এসব নির্দেশনা যেমন মেনে চলছে না তেমনি এসব নির্দেশনা শুধু কাগজে কলমে যা বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। তবে এসব নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব বলে মনে করে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। তাদের পক্ষ থেকে করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রযুক্তি ব্যবহারে চার প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রথমত-পরামর্শক কমিটিতে টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি খাতের ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দ্বিতীয়ত-হ্যান্ডসেটের দাম সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা বা অপারেটরদের মাধ্যমে কেবলমাত্র সংযোগ গ্রহণ এর চুক্তিতে শর্তসাপেক্ষে দীর্ঘমেয়াদি কিস্তিতে সরবরাহ করার অনুমতি প্রদান করা। তৃতীয়ত-নেটওয়ার্কের মানোন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ যা মহামান্য হাইকোর্টে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।
চতুর্থত-ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে ইকোসিস্টেমের উপর গুরুত্ব আরোপ করা। সংগঠনটি জানিয়েছে, এর মাধ্যমে সরকারের ডিজিটাল বাস্তবায়ন যেমনিভাবে সম্ভব ঠিক তেমনিভাবে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ প্রসঙ্গে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, সরকারের প্রতি স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানিয়েছি। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ শুরুর প্রাক্কালে সরকারের কাছে আমরা দাবি করেছিলাম জনগণকে নিরাপদ রাখতে করোনা ট্রেকার অ্যাপ চালু করার। সরকার প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুরক্ষা অ্যাপ তৈরি করে, কিন্তু এই অ্যাপের সক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত। বর্তমানে এই অ্যাপ কেবলমাত্র করোনা পরীক্ষা এবং টিকা রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমের মধ্যেই সীমিত। আমরা চেয়েছিলাম ব্যবহারকারীরা এই অ্যাপ ব্যবহার করবেন বাধ্যতামূলকভাবে। যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী যদি আক্রান্ত হয় তাহলে ওই অ্যাপ লাল সংকেত দিবে, আর আক্রান্ত না হলে সবুজ সংকেত দেবে। যদি পরীক্ষার জন্য কেউ স্যাম্পল দিয়ে থাকে এবং রিপোর্ট পেন্ডিং থাকে তাহলে হলুদ সংকেত দেবে। এর মাধ্যমে গণপরিবহন, রাস্তাঘাট ও বাজারে বা সামাজিক অনুষ্ঠানে চলাচল করা ব্যক্তিরা সতর্ক হবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কাতার সরকার এরূপ একটি অ্যাপ বাধ্যতামূলক করেছে। কোনো নাগরিক ঘর থেকে বের হওয়ার পূর্বে এই অ্যাপ চালু রেখে বের হতে সরকার নির্দেশ প্রদান করেছেন। না ব্যবহার করলে ৫৫ হাজার ডলার জরিমানা বা তিন বছরের জেলের বিধান রাখা হয়েছে। এ ভাবেই ব্যবহারকারী আক্রান্ত বা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে ছিল কিনা তা জানা সম্ভব। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি করোনা মহামারি ঠেকাতে টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তির সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবহার করতে নাগরিকদের বাধ্যতামূলক আইন চালু করুক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাকালে পরিস্থিতি বিবেচনায় যে যার মতো অ্যাপ বানাচ্ছেন। প্রচার করছেন ঢাকঢোল পিটিয়ে। বলা হচ্ছে- এসবই জনস্বার্থে। কিছুদিন যেতে না যেতেই হারিয়ে যাচ্ছে সে সব অ্যাপ। অ্যাপ তৈরি করতে অনেক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। খরচ করছেন অনেক টাকা। দিনশেষে বেশির ভাগ টাকাই যাচ্ছে জলে। বিশেষ করে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান জনস্বার্থে এক বা একাধিক অ্যাপ তৈরি করতে খরচ করেছেন লাখ থেকে কোটি টাকা। এসব অ্যাপ পরিচালনা করতে আবার বাড়তি লোকবল ও বাড়তি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে তাদের। এসব দিক বিবেচনা করে ও সরকারি অর্থ ব্যয় কমাতে প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা এখন মত দিচ্ছেন জাতীয় কমিটি গঠন করতে। প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পরামর্শের জন্য এ কমিটি গঠনের কথা বলছেন তারা। প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা মহামারিতে সকল কার্যক্রম শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য, সরকারি- বেসরকারি, অফিস-আদালত, এমনকি ব্যক্তিগত দৈনন্দিন কাজের ক্ষেত্রেও একমাত্র মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, গত দুই বছরেও একহাতে একটি কেন্দ্রীয় বা জাতীয়ভাবে কোনো পরামর্শ ও দিকনির্দেশনামূলক কমিটি গঠন হয়নি। ফলে বাড়ছে প্রযুক্তিগত অসহযোগিতা এবং জটিলতা। করোনার পরীক্ষা ফলাফল কিংবা টিকাদান, সরকারি সুরক্ষা অ্যাপসের জটিলতা সর্বশেষ পুলিশের ইমার্জেন্সি পাস প্রাপ্তিতে জটিলতা প্রমাণ করে জাতীয়ভাবে প্রযুক্তিগত পরামর্শক কমিটি কতোটা প্রয়োজন। একেক প্রতিষ্ঠান একেকভাবে নিজেদের চাহিদা ও ইচ্ছা অনুযায়ী প্রযুক্তিগত সার্ভার ওয়েবসাইট কিংবা অ্যাপ এমনকি পেজ তৈরি করছে। এতে অনেক বিষয় অসম্পূর্ণ থাকায় নাগরিক ভোগান্তি কমার বদলে বেড়েই চলেছে। প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টদের অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় কমিটি গঠন করা হলে ভোগান্তি কমতে পারে বলে তাদের অভিমত। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, সমপ্রতি করোনা সুরক্ষা ‘ট্যাকার’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়। কয়েকদিনে মাত্র ৪ থেকে ৫শ’ গ্রাহক অ্যাপটি ডাউনলোড করেন। এখন ওই অ্যাপের আর কোনো খবর নেই। এটা উদাহরণ। এরকম অসংখ্য অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে করোনাকালে। বেশির ভাগই টিকছে না বেশিদিন। অথচ অ্যাপ তৈরির আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। এ জন্য ব্যয় করা হচ্ছে প্রচুর অর্থ। প্রসঙ্গত সরকারি হিসেবে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৮ হাজার ১শ’ ৭৬ জন। আর শনাক্ত হয়েছে ১৬ লাখ ৪২ হাজার ২৯৪ জন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর