শ্রমিক পাঠানোর জন্য মালয়েশিয়ার প্রস্তাবিত মাত্র ২৫টি বাংলাদেশি রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি এবং ২৫০টি সাব-এজেন্ট অনুমোদন দেয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ। পক্ষান্তরে রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠুতা নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ। অনলাইন মালয় মেইল ও মালয়েশিয়া কিনি এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে আরো নিরাপত্তা চায় বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের (আইএলও) বিধান অনুসরণের দাবি করেছে বাংলাদেশ।
এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়েছে। সর্বশেষ বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমেদ গত ১৮ই জানুয়ারি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী এম সারাভানানকে চিঠি লিখেছেন। এতে বাংলাদেশের মন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে যে সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হয়েছে তার অধীনে ঢাকা প্রদত্ত তালিকা থেকে অনলাইন ব্যবস্থায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে এজেন্সি রিক্রুট করা উচিত।
রিক্রুটমেন্ট এজেন্সির জন্য কোটা সিলেকশন ও তার বিতরণ মালয়েশিয়াকে স্বচ্ছতা ও সুস্থতার সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে।
মালয়েশিয়ার মন্ত্রী এম সারাভানান ১৪ই জানুয়ারি বাংলাদেশি মন্ত্রীকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। তার জবাবে ইমরান আহমেদ ১৮ই জানুয়ারি ওই চিঠি পাঠিয়েছেন। এম সারাভানান তার চিঠিতে বাংলাদেশকে বলেছেন, বাংলাদেশি শ্রমিক রিক্রুট করা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে যে সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হয়েছে তা স্বাক্ষর হওয়ার দিনেই কার্যকর হয়েছে। উল্লেখ্য, ওই সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর হয় ২০২১ সালের ১৯ শে ডিসেম্বর। মন্ত্রী ইমরান আহমেদকে মালিয়েশিয়ার মন্ত্রী এম সারাভানান আরো জানান যে, একই দিনে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ বাতিল করেছে মালয়েশিয়া।
তিনি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক রিক্রুট প্রক্রিয়া দ্রুত ও মসৃণ গতিতে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। তিনি আরো জানান, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের ২৫টি প্রধান রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি এবং প্রতিটি প্রধান রিক্রুটমেন্ট এজেন্সির বিপরীতে ১০টি করে সহযোগী এজেন্সি নিয়োগের বিষয়ে আলোচনায় একমত হয়েছেন মন্ত্রী ইমরান আহমেদ। ওই চিঠিতে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মোট ২৫০টি রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি এ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। উপরন্তু বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকবে মালয়েশিয়ান রিক্রুটমেন্ট এজেন্সিগুলো। স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্বারকে এ বিষয়টির উল্লেখ আছে।
এর জবাবে বাংলাদেশি মন্ত্রী ১৮ই জানুয়ারি লেখা চিঠিতে বলেছেন, তার সরকার চায় মালয়েশিয়ায় তার নাগরিকদের মোতায়েনে স্বচ্ছতা, সুস্থতা ও নিরাপত্তা। এ ক্ষেত্রে বিধিবিধানগুলো অনুসরণের ওপর জোর দেয়া হয়। এতে আইএলও’র সনদের উল্লেখ করেন মন্ত্রী ইমরান আহমেদ। এতে তিনি যত দ্রুত সম্ভব রিক্রুটমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে এম সারাভানানের টিমের সঙ্গে কাজ করতে তার টিম প্রস্তুত বলে মত প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, গত বছর ১৯ শে ডিসেম্বর দুই দেশের দুই মন্ত্রী কুয়ালালামপুরে সমঝোতা স্বারকে স্বাক্ষর করেন। এর মেয়াদ ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ বছর।